শিক্ষা ব্যবস্থাকে একটি কাঠামোর মধ্যে আনতে হবে : শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষা ব্যবস্থাকে একটি কাঠামোর মধ্যে আনতে হবে : শিক্ষামন্ত্রী

কওমি মাদ্রাসায় একটি বয়স সীমা পর্যন্ত সরকারি শিক্ষাক্রম পড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এই বিষয়টি নিয়ে বিষয়টি নিয়ে কওমি মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বেফাকুল মাদারাসিল আরাবিয়ার (বেফাক) সঙ্গে কাজ করার কথাও বলেছেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, যত্রতত্র অনিবন্ধিত মাদ্রাসা গড়ে উঠায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিতির কমতির দিকে। একে সবার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তিনি বলেছে, ‘এটি নিরসন করতে হবে।’

রোববার সন্ধ্যায় ওসমানী মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় কার্য অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

কওমি মাদ্রাসার শিক্ষাক্রম নিয়েও সরকার ভাবছে বলেও জানান নওফেল। তিনি বলেন, ‘একটি বয়সসীমা পর্যন্ত সেখানে যাতে জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুসরণ করা হয়। নয়তো শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জন করতে পারবে না। এজন্য বেফাকের সঙ্গে কাজ করবো।’

এসব বিষয়ে গত বছর কওমি মাদ্রাসার নেতা ও বোর্ডগুলোর সঙ্গে বসার কথাও তুলে ধরেন মন্ত্রী। তিনি জানান, মাদ্রাসায় যে বয়সে শিক্ষণ অর্জন করার কথা সেটি নিশ্চিত করা হচ্ছে কি না তা নিয়ে কথা হয়েছে।

এজন্য এনসিটিবি থেকে কওমি তাদের কারিকুলামে (মাদ্রাসা) প্রণীত বই পাঠানো হয়েছে। সেগুলো নিয়ে যাচাই বাছাই হয়েছে।

কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ সনদ দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে নওফেল বলেন, ‘তবে মাঠ পর্যায়ে সেই শিক্ষার্থীরা সেই যোগ্যতা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। আমরা চাই কওমি মাদ্রাসায় যারা পড়াশোনা করছেন, তারা যাতে একটি বয়সসীমার মধ্যে ন্যূনতম যে শিক্ষণ অর্জন করার কথা, সেটি যাতে তারা পায়। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করব। এক্ষেত্রে তাদেরকেও কঠোর হতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে একটি কাঠামোর মধ্যে আনতে হবে।’

ডিসিরা কী বলেছেন প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘অনিবন্ধিত মাদ্রাসার বিষয়টি উঠে এসেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই প্রতিষ্ঠানগুলো যত্রতত্রভাবে হওয়ার কারণে সরকারের যে প্রাথমিক শিক্ষা, সেখানে শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও উপস্থিতির কমিত দেখা যাচ্ছে।’

সরকার কী ভাবছে প্রশ্নে নওফেল বলেন, ‘যে সময়ে সাধারণ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়, সেই সময়ে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান (নুরানী মাদ্রাসা) বন্ধ রাখা যায় কি না সে আলোচনা আমরা ভবিষ্যতে করবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতির হার বাড়বে, সরকারের শিক্ষাক্রম অনুসারে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি কমবে, সেটি কখনো কাঙ্ক্ষিত নয়। এ বিষয়ে আমরা মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করব। বেফাক কীভাবে তাদের ছয়টি বোর্ডের মাধ্যমে নিবন্ধন দিচ্ছে, তাদের সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে।’

কওমি মাদ্রাসা নিবন্ধনের বিষয়টা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে মাঠ প্রশাসন সারা দেশে জরিপ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেটি নিয়েও আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করবো।’

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়নের বিষয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘যৌন নিপীড়নবিরোধী কমিটিতে ‘অভিযোগ তদন্তাধীন’-এই যুক্তি দেখিয়ে অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলেও এক ধরনের প্রতিরক্ষা দেওয়া হয়। কমিটি তদন্ত করুক বা না করুক দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী পুলিশ যাতে ব্যবস্থা নিতে পারে, সেটি যাতে আমরা বন্ধ না করি।’

স্কুলে নতুন পাঠ্যক্রম নিয়ে ডিসিরা অনেক কথা বলেছেন জানিয়ে নওফেল বলেন, ‘সেটার বিষয়ে নেতিবাচক কোনও অভিজ্ঞতার কথা তারা বলেননি। ফলে আমরা ধরে নিতেই পারি কারিকুলামের টিচিং লার্নিং প্রসেস শিক্ষক ও অভিভাবকরা গ্রহণ করেছেন।’

Scroll to Top