কর্মবিরতিতে থাকা রেলের রানিং স্টাফ নেতাদের সাথে কয়েক দফা বৈঠকের পরও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি সরকার। তবে রাতের মধ্যে সমস্যার সমাধান করা যাবে বলে মনে করছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি সরকার। এর আগে প্রথম ধপায় আজ দুপুরে কমলাপুর স্টেশনের ভিআইপি কক্ষে হওয়া বৈঠকটি কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়।
এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে বৈঠকটি শুরু হয়। বৈঠকে ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম ও রেলওয়ের মহাপরিচালক। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।
বৈঠক চলাকালীন বেলা ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের ঢাকা বিভাগের আহ্বায়ক সাইদুর রহমান বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন।

পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দীর্ঘক্ষণ রেলসচিব, মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেছি, তবে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারিনি। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। তবে আমরা কর্মবিরতিতে অনড় আছি।’

মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জটিলতা নিরসনের দাবিতে কর্মবিরতিতে গেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফরা।
কর্মবিরতির ফলে সোমবার দিবাগত রাত ১২টার পর শিডিউলে থাকা ট্রেনগুলোতে ওঠেননি রানিং স্টাফরা। ফলে সারা দেশে বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। ট্রেনচালক, গার্ড ও টিকিট চেকার পদধারীরা রানিং স্টাফের মধ্যে রয়েছেন।
রেলওয়ে কর্মচারীদের কর্মবিরতিতে ট্রেন বন্ধ হওয়ার সুযোগে বাস ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। গন্তব্যে পৌঁছাতে অসহায় হয়ে পড়া সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি বাস ভাড়া আদায়ের অভিযোগ এসেছে।
এর আগে রেলের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্মচারীদের যৌক্তিক দাবি পূরণ হয়েছে, তারপরও তারা কেন আন্দোলন করছেন।’
তিনি বলেন, ‘রেলের কর্মচারীদের জন্য মানবিক কারণে যতটুকু করা দরকার করেছি। ওভারটাইম ইস্যুর সমাধান করা হয়েছে। এর বাইরে যেসব দাবি রয়েছে, সেগুলো পূরণ করা সম্ভব নয়। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করতে হবে।’
এদিকে ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সকালে কমলাপুর রেল স্টেশনে পরিদর্শনে যান রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাদের দাবি-দাওয়া পূরণে রেল বিভাগের হাতে নেই। এটা অর্থ বিভাগের হাতে, আমরা তাদের কাছে এটা তুলেছি। অর্থ বিভাগ এটা অনেকাংশে এটা পূরণ করে দিয়েছে। দরকার হলে আমরা বাকিটা নিয়েও তাদের সঙ্গে আলোচনা করব।’
রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের এ উপদেষ্টা বলেন, ‘তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনা হতে পারে কিন্তু রেল বন্ধ করতে পারে না। এতে সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে।’