দশম বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে শামীম হোসেন পাটোয়ারী শেষ দিকে ঝড় তুললেও চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়তে পারেনি রংপুর রাইডার্স। ১৪৯ রান তুলেছিল সাকিব আল হাসান, জেমি নিশামদের দল। পরে জবাব দিতে নেমে শুরুতে ঠিকভাবে এগুতে না পারলেও মুশফিকুর রহিমের দারুণ এক ইনিংসের কল্যাণে ঠিকই দারুণ জয় পেয়েছে ফরচুন বরিশাল।
দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার রংপুর রাইডার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে দ্বিতীয় দল হিসেবে দশম বিপিএলের ফাইনাল নিশ্চিত করল তামিম ইকবালদের ফরচুন বরিশাল। এদিকে, টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল রংপুরের। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছিল রংপুর। সে হিসেবে ফাইনালে উঠার জন্য দুই ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তারা।
কিন্তু একদিন আগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে হারার পর আজ দ্বিতীয় সুযোগও কাজে লাগাতে পারল না সাকিব, নুরুল হাসান সোহান, মোহাম্মদ নবিদের দল।
আগামী ১ মার্চ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলতে নামবে ফরচুন বরিশাল। ম্যাচটা অনুষ্ঠিত হবে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মিরপুরে রংপুরের ১৪৯ রানের জবাব দিতে নেমে বরিশালের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। মেকশিফট ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে ইনিংসের সূচনা করতে নেমেছিলেন তামিম ইকবাল। ফজলহক ফারুকীর বিপক্ষে নতুন বলে সুবিধা করতে পারেননি মিরাজ। ফর্মে থাকা তামিমও আজ রান পাননি।
৮ বলে ১০ রান করে ফিরেছেন তামিম। মিরাজ ১৪ বলে ৮ রান করে ফিরেছেন। এরপর সৌম্য সরকারকে নিয়ে দারুণ একটা জুটি গড়ে তোলেন মুশফিকুর রহিম। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৩৭ বলে ৪৭ রান তোলেন দুজন। এরপর বরিশালকে আর চাপে ফেলতে পারেনি রংপুর।
সৌম্য ১৮ বলে ২২ রান করলে এই জুটি ভাঙে। তবে মুশফিক অবিচল ছিলেন শেষ অবদি। মাঝখানে কাইল মায়ার্স ও ডেভিড মিলারের সঙ্গে দারুণ আরও দুটি জুটি গড়ে বরিশালকে জিতিয়ে তবেই মাঠ ছেড়েছেন মুশফিক। মাঝে কাইল মায়ার্স ১৫ বলে ১ চার ৩ ছয়ে ২৮ রান করেন। মুশফিক ৩৮ বলে ৬টি চার ১টি ছয়ে ৪৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। ডেভিড মিলার ১৮ বলে ২২ রানে অপরাজিত ছিলেন। ১৮.৩ ওভারে জয়ের জন্য ১৫২ রান তুলে ফেলে বরিশাল।
রংপুরের হয়ে ৩৭ রানে দুই উইকেট নিয়েছেন আবু হায়দার রনি। আশ্চর্য, রংপুরের পক্ষে সাকিব আল হাসান আজ বোলিংয়ে এসেছেন সপ্তম বোলার হিসেবে। বোলিং করেছেন মাত্র ১.৩ ওভার!
এরআগে শামীম পাটোয়ারীর ব্যাটে দেড়শর কাছাকাছি গেছে রংপুর। শুরুতে বরিশালের বোলাররা শুরুতে রংপুরের ব্যাটারদের দাঁড়াতেই দেননি। দ্বিতীয় ওভারে জোড়া আঘাত হানেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। মিডল অর্ডার থেকে ওপেনিংয়ে নামা শেখ মাহেদিকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান সাইফউদ্দিন। চার বল পর তিনে নামা সাকিব আল হাসানকেও উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে বুনো উল্লাসে মেতে উঠেন সাইফউদ্দিন।
খানিক বাদে ওপর ওপেনার রনি তালুকদারও ফিরলে দলীয় ১৮ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় রংপুর। তবুও বড় স্কোরের সম্ভবনা ছিল রংপুরের। কারণ এরপর ব্যাটিংয়ে নামার জন্য অপেক্ষা করছিলেন জেমি নিশাম, নিকোলাম পুরান, মোহাম্মদ নবির মতো বিশ্বখ্যাত ব্যাটাররা। রংপুরের দুর্ভাগ্য এদের কেউই আজ রান পাননি।
১২ বলে ৩ রান করে ফিরেছেন নিকোলাস পুরান। মোহাম্মদ নবি ১৫ বলে ১২ রান করেছেন। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত একটা ইনিংস খেলা জেমি নিশাম মিডল অর্ডারে অনেকক্ষণ ক্রিজে ছিলেন বটে। কিন্তু বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে পারেননি আজ। ২২ বলে ২৮ রান কের আউট হয়েছেন কিউই অলরাউন্ডার।
সাত নম্বরে নামা নুরুল হাসান সোহানও যখন রান পেলেন না তখন মনে হচ্ছিল বলার মতো রানও হয়তো হবে না রংপুরের। ১৭ বলে ১৪ রান করে ফেরেন সোহান। রংপুরের স্কোর শেষ পর্যন্ত একশ পর্যন্ত পৌঁছে কিনা একটা সময় সেই শঙ্কাও দেখা হচ্ছিল। কিন্তু শামীম পাটোয়ারীর শেষের ঝড়ে গল্পটা পাল্টে গেছে।
শেষ দিকে শামীমের ব্যাট যেন রীতিমতো তরবারি বনে গেল! ওবেদ ম্যাককের করা ১৯তম ওভার থেকেই ২৬ রান তুলে নেন শামীম। মাত্র ২০ বলে ফিফটি পূর্ণ করা শামীম শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ২৪ বলে ৫৯ রান করে। চার মেরেছেন ৫টি, ছক্কাও ৫টি।
শামীমের শেষের ঝড়ে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রানে থেমেছে রংপুর। পেসার আবু হায়দার রনি ৯ বলে ১২ রান করে অপরাজিত ছিলেন।
বরিশালের হয়ে ৪ ওভারে ২৫ রানে তিনটি উইকেট নিয়েছেন জেমস ফুলার। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৪ ওভারে ২৭ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন। একটি করে উইকেট নিয়েছেন কায়াল মায়ার্স ও মেহেদি হাসান মিরাজ।
The post রংপুরের বিদায়, ফাইনালে তামিমদের বরিশাল appeared first on Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment.