যে ৬ খাবার নারীর খাদ্যতালিকায় থাকা জরুরি

যে ৬ খাবার নারীর খাদ্যতালিকায় থাকা জরুরি

লাইফস্টাইল ডেস্ক

হরমোনজনিত পরিবর্তনের কারণে জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে নারীদের দেহে নানা পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয় নারীকে। ফলে নারীর দরকার বাড়তি পুষ্টির।

সব মানুষেরই পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। তবে কিছু খাবার বিশেষভাবে নারীদের খাওয়া দরকার। গবেষণায় দেখা গেছে, নারীর শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে এই খাবারগুলো অত্যন্ত সহায়ক। গর্ভাবস্থা, পিরিয়ড, মেনোপজের ঠিক আগে এবং পরে জটিলতাসহ নারীদের নানা শারীরিক সমস্যা প্রতিরোধে এই খাবারগুলো ভূমিকা রাখে।

আসুন জেনে নেই সেই খাবারগুলো কী কী-

ওমেগা ৩

মেয়েদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ওমেগা ৩ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। সামুদ্রিক মাছের তেল ওমেগা ৩-এর চমৎকার উৎস। দেশীয় মাছ ইলিশ, রূপচাঁদায় ওমেগা ৩ এর পরিমাণ বেশি। বীজ জাতীয় খাবারেও ওমেগা ৩ আছে। আখরোট, বাদাম, দুধ ও দইয়ে প্রচুর ওমেগা ৩ পাওয়া যায়।

গর্ভবতী নারীদের ওমেগা ৩ জাতীয় খাবারের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। এতে গর্ভাবস্থায় এবং সন্তান জন্মের পর নানা স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়ানো যায়। এছাড়া গর্ভের শিশুর হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে ওমেগা ৩ সহায়ক। তাই আপনার খাদ্যতালিকায় ওমেগা ৩ জাতীয় খাবার রাখুন।

লেবু

ভিটামিন সি এর বড় উৎস হলো লেবু। লেবু হজমেও সহায়ক। পিরিয়ডের সময় অনেকের গ্যাষ্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়। খাবার হজমে সমস্যা হয়। এইসময় লেবু খুবই কার্যকর। সকালবেলা উষ্ণ গরম পানিতে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে খেলে গ্যাষ্ট্রিকের সমস্যা কমে যায়।

ওজন কমাতেও লেবুর জুড়ি নেই। লিভার বা যকৃতের টক্সিন (ক্ষতিকর উপাদান) দূর করতে লেবু বেশ উপকারি। ক্যান্সার ও শরীরের প্রদাহ দূর করতে লেবু সহায়ক।

টমেটো

প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার টমেটো। গবেষণায় দেখা গেছে, স্তন ও জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধে টমেটো অত্যন্ত কার্যকর।

কাওন

উদ্ভিজ্জ খাবার কাওন। এতে প্রোটিন ও ফাইবার প্রচুর পরিমাণে থাকে। অনেক গর্ভবতী মা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন। কাওনে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। আমাদের দেশে মূলত খিচুরি কিংবা পায়েস হিসেবেই কাওন খাওয়ার প্রচলন বেশি। ভাতের বিকল্প হিসেবেও কাওন খাওয়া যায়। অনেক দেশে সালাদে কাওন যোগ করা হয়।

কাওনে থাকা প্রোটিন চুলের জন্য খুবই ভালো। চুলে পুষ্টি যোগায় এবং চুলের গোড়া শক্ত করে। চুলের আর্দ্রভাব ধরে রাখে। নিয়মিত কাওন খেলে চুল পড়া কমে যায়। তাছাড়া বাইরের ধুলোবালিতে চুল রুক্ষ হয়ে যায়। রুক্ষ চুলকে ভেতর থেকে সুরক্ষা যোগাতে কাওন বেশ উপকারি।

ব্রকলি

স্বাস্থ্যগত নানা সমস্যা দূর করতে ব্রকলি বেশ উপকারি। এককাপ ব্রকলিতে শতভাগ কোলাজেন আছে। কোলাজেন ত্বকের নমনীয়তা ধরে রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের লাবণ্যতা বজায় রাখতে বাজারের কেনা প্রসাধনী ব্যবহারের চেয়ে সঠিক খাদ্যাভাস মেনে চলা বেশি উপকারি। এতে ত্বক ভেতর খেকে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। এছাড়া দেহের কোষগুলো সজীব রাখতে ব্রকলি সহায়ক। তাই নিয়মিত ব্রকলি খাওয়া ভালো।

হলুদ গুঁড়া

ত্বক পরিচর্যায় হলুদ গুঁড়ার ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। হলুদ গুঁড়ায় রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। এটি প্রাকৃতিক এন্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। এছাড়া ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাল প্রতিরোধেও কাঁচা হলুদ বেশ কার্যকর। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।

প্রতিদিন ১ চা চামচ মধুর সঙ্গে ১ চা চামচ কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে খাওয়া ভালো। এতে নানা রোগ-ব্যাধি থেকে দূরে থাকা যায়।

শুধু খাবারদাবার নয়, সুস্থ থাকতে হলে সঠিক জীবনযাপন পদ্ধতির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করা ও পর্যাপ্ত ঘুমানোও সুস্থ থাকার অন্যতম নিয়ামক।

সারাবাংলা/এসবিডিই

Scroll to Top