দ্বিতীয় কারণ, যা আমাদের প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলেছে, তা এক শীতল, কঠিন সত্য, অসমতা কমানোর মতো যথেষ্ট সম্পদ পৃথিবীর নেই। এটা ঠিক, আমাদের আরও অনেক কিছু করার আছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, পৃথিবীর সব প্রান্তে আমরা সমান মনোযোগ দিতে পারি না।
স্বল্প সামর্থ্য দিয়ে আমরা হয়তো পরিবেশ, স্বাস্থ্য, উন্নয়ন—তিন ক্ষেত্রেই একসঙ্গে এগোতে পারব না; কিন্তু স্বল্প কার্বন নিঃসরণের এক পৃথিবী দিয়েই-বা আমরা কী করব, যদি সেই পৃথিবী রোগবালাই, অনাহার, মৃত্যুতে ছেয়ে যায়! তাই আমাদের পথ খুঁজতে হবে, যেন তিনটি সমস্যা সমাধানেই একযোগে কাজ করতে পারি।
সৌভাগ্যক্রমে উদ্ভাবনের সেই শক্তি আছে। উদ্ভাবন দিয়েই আমরা কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনতে পারি, আবার একই সঙ্গে মানুষের কল্যাণেও ভূমিকা রাখতে পারি।
শিশুমৃত্যুর হারের কথাই ধরুন। ১৯৯০ সালে ১ কোটি ২০ লাখ শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। ২০০০ সালে সংখ্যাটা ১ কোটিতে নেমে এসেছে। ২০০৯ সালের মধ্যে আমরা সংখ্যাটা ৫০ লাখের নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি।
কীভাবে হলো? পৃথিবীর এই স্বল্প সম্পদই আমরা খুব গুরুত্বপূর্ণ এক উদ্ভাবনে কাজে লাগিয়েছি: টিকা।
যখনই কোনো খাতে আমরা খরচ করব, তখনই খুব সহজ একটা প্রশ্ন নিজেদের করা উচিত, কীভাবে এই ব্যয় বর্তমান ও ভবিষ্যতে আরও বেশি মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে, জীবনের মানোন্নয়ন করতে পারে?
আমার বিশ্বাস, এ প্রশ্নই আমাদের আগামী দশকে পথ দেখাবে। এই প্রশ্নের উত্তরের মধ্যেই লুকিয়ে আছে জলবায়ু সংকটের সমাধান।
যেসব উদ্ভাবন আরও বেশি মানুষের কাজে আসবে, সেগুলোর পেছনে বিনিয়োগ করে আমরা শুধু পৃথিবীকে টিকিয়েই রাখব না, করব আরও বাসযোগ্য। ধন্যবাদ।