এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
ঢাকা শহরের একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, স্থানীয় নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে প্রায় ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ মানসিক ব্যাধি বিকাশের ঝুঁকিতে রয়েছে।
মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সবশেষ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা নিম্ন আয়ের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ওপর দারিদ্র্যের গভীর প্রভাব তুলে ধরেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিম্ন আয়ের মানুষদের মধ্যে ২৪.৩ শতাংশ, নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষদের মধ্যে ১৫.৭ শতাংশ এবং উচ্চ-মধ্যম আয়ের মানুষদের মধ্যে ৮.৪ শতাংশের মানসিক ব্যাধি বিকাশের ঝুঁকি রয়েছে।
গবেষণায় দারিদ্র্য ও মানসিক ব্যাধির মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া গেছে। দারিদ্র্যের কারণে উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও শারীরিক ব্যাধির ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। দারিদ্র্যের নেতিবাচক প্রভাব মানসিক সমস্যার পাশাপাশি আর্থিক অসঙ্গতি আরও বাড়িয়ে তোলে।
গবেষণায় ৫৭৬ জন প্রাপ্তবয়স্ক অংশগ্রহণকারীকে তিনটি আয়ভিত্তিক গ্রুপে ভাগ করা হয়: নিম্ন আয় (১৫,০০০ টাকার কম), নিম্ন-মধ্যম আয় (১৬,০০০-৩০,০০০ টাকা), উচ্চ-মধ্যম আয় (৩০,০০০ টাকার বেশি)। গবেষণায় এসআরকিউ প্রশ্নাবলী ব্যবহার করে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার বিশ্লেষণ করা হয়। যেখানে দেখা যায়, নিম্ন আয়ের গোষ্ঠীর গড় স্কোর ছিল ৪.২৭, যেখানে ২৪.৩% অংশগ্রহণকারী মানসিক ব্যাধি বিকাশের ঝুঁকিতে। নিম্ন-মধ্যম আয়ের গোষ্ঠীতে গড় স্কোর ছিল ৩.৩৪ এবং ঝুঁকি ১৫.৭%। উচ্চ-মধ্যম আয়ের গোষ্ঠীতে গড় স্কোর ছিল ২.৫৭ এবং ঝুঁকি মাত্র ৮.৪%।
এই সমীক্ষাটি ঢাকা শহরের বস্তি এলাকা এবং শহরাঞ্চলে পরিচালিত হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীদের ঢাকা শহরের কামরাঙ্গীরচর, মিরপুর, বসুন্ধরা, বনশ্রী, ধানমন্ডি এলাকার নির্বাচিত স্থান থেকে নেওয়া হয়েছিল। পারিবারিক আদমশুমারির ভিত্তিতে পরিবারগুলোকে এলোমেলোভাবে নির্বাচন করা হয়েছিল এবং ১৮ বছরের বেশি বয়সী মোট ৫৭৬ জন প্রাপ্তবয়স্ককে বাছাই করা হয়েছিল। তাদের লিখিত পরীক্ষার পর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল।
গবেষকরা বলছেন, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য মানসিক স্বাস্থ্যসেবা বাড়ানো এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করা জরুরি। এছাড়াও, আরও সুনির্দিষ্ট এবং দীর্ঘমেয়াদি গবেষণার মাধ্যমে দারিদ্র্য ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই গবেষণা নিম্ন আয়ের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় নীতি নির্ধারকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করবে।