ভোলে বাবা'র ওপর বাড়ছে অনুসারীদের ক্ষোভ | চ্যানেল আই অনলাইন

ভোলে বাবা'র ওপর বাড়ছে অনুসারীদের ক্ষোভ | চ্যানেল আই অনলাইন

ভারতের উত্তর প্রদেশের হাথরসে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে নারী ও শিশুসহ ১২১ জন নিহত হয়েছেন। ঐ অনুষ্ঠানে ভোলে বাবা নামে পরিচিত এক ধর্মপ্রচারক তার অনুগামীদের উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। সেই অনুষ্ঠান শেষে তাঁবু থেকে বের হওয়ার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন এই ধর্মগুরু। আর এতে করেই ভোলে বাবা’র ওপর বাড়ছে তার অনুসারীদের ক্ষোভ।

এনডিটিভি জানিয়েছে, এই ঘটনায় অনেক পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। পদদলিত হয়ে অনেকে স্বজনদের হারিয়েছেন। অনেকেই লাশ শনাক্ত করতে যাচ্ছেন এক মর্গ থেকে অন্য মর্গে। লাশ খুঁজে পেলে শুরু হয় শোক। আহতরাও বিভিন্ন হাসপাতালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। অনেকেই এখনও খুঁজে পাননি স্বজনদের।

অনেকেই এখনও নিখোঁজ
উর্মিলা দেবী তার ১৬ বছর বয়সী নাতনীকে নিয়ে অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। বিশৃঙ্খলা শুরু হলে তারা আলাদা হয়ে যান। বুধবার রাত থেকে বৃদ্ধ মহিলাটি হাথরাস এবং ইটাহর তিনটি জেলা হাসপাতালে গেলেও তার নাতনীকে খুঁজে পাননি।

তিনি বলেন, ভিড়ে আমি তার নাম ধরে চিৎকার করছিলাম। যখন আমি তাকে খুঁজে পাইনি তখন হাসপাতালে খুঁজতে থাকি। আমি তাকে এখনও খুঁজে পাইনি।

একজন নারীকে খুঁজে পেতে আলিগড়, হাতরাস এবং ইটাহ হাসপাতালে গিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু তাকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ভোলে বাবা’র ওপর ক্ষোভ
পুলিশ বলছে, সৎসঙ্গে (প্রার্থনা সভা) শেষে ভোলে বাবা তার গাড়িতে করে চলে যাচ্ছিল তখন অনুসারীরা তার গাড়ির ধুলো সংগ্রহ করতে ছুটে আসে। এসময় ভোলে বাবা’র নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা কিছু অনুসারীকে ধাক্কা দেয়। এতেই সূত্রপাত ঘটে ঘটনার। তার অনুসারীদের অনেকেই এখন হাসপাতালে ভর্তি। তাদের মধ্যে এখন শ্রদ্ধার পরিবর্তে জন্ম নিয়েছে ক্ষোভের।

বিশৃঙ্খলায় হাত ভেঙ্গে যাওয়া একজন মহিলা বলেন, বাবার যদি সত্যিই ক্ষমতা থাকে এবং আমাদের সম্পর্কে চিন্তা করেন, তাহলে তার এখানে এসে আমাদের সুস্থ করা উচিত। তার উচিত আমাদের চিকিৎসায় সাহায্য করা।

হাথরাসের বাসিন্দা বিনোদ তার বাড়িতে থাকা ভোলে বাবার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছেন। দুর্ঘটনায় তার মা জয়া, স্ত্রী রাজকুমারী এবং মেয়ে ভূমি পদদলিত হয়ে মারা গেছেন। তিনি বলেন, আমি দূরে ছিলাম, সন্ধ্যায় পদদলিত হওয়ার বিষয়ে জানতে পারি। আমি বাড়িতে ছুটে গিয়ে দেখি তারা সবাই মারা গেছে।

রাজনৈতিক খেলা
এই ঘটনার পরে রাজনৈতিক দোষারোপের খেলা শুরু হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, এর পিছনে ষড়যন্ত্র আছে কিনা তা খুঁজে দেখা হবে। প্রধান বিরোধী সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব এই ঘটনার জন্য সম্পূর্ণরূপে বিজেপি সরকারকে দায়ী করেছেন। এদিকে ভোলে বাবার আইনজীবী বলেছেন, এটি একটি “পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র”।

মামলায় ভোলে বাবাকে অভিযুক্ত করা হয়নি বরং তার সহযোগী এবং অনুষ্ঠানের প্রধান সংগঠককে প্রধান আসামী করা হয়েছে। মামলায় স্থানীয় প্রশাসনকে সমস্ত দায় থেকে মাফ করে অব্যবস্থাপনার জন্য আয়োজকদের দায়ী করা হয়েছে।

রাজ্য সরকার অবশ্য আশ্বস্ত করেছে যে দোষী কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। এর জন্য একটি বিশেষ তদন্তকারী দল  ঘটনার তদন্ত করছে। রাজ্য সরকার তদন্তের জন্য হাইকোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্যানেলও গঠন করেছে।

Scroll to Top