আন্দোলনের নামে বুয়েটে অচলাবস্থা সৃষ্টির দায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীর নামে হিজবুত তাহেরি, শিবির ও উগ্র মৌলবাদের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।
সোমবার বুয়েট প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক থেকে বের হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশে(আইইবি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান আইইবির সভাপতি ও বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতা প্রকৌশলী. আবদুস সবুর। এসময় বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, “বুয়েট এর আপামর ছাত্র-ছাত্রীরা জঙ্গী, মৌলবাদীদের সকল সময় প্রতিরোধ করে যার প্রমাণ আমরা বারবার পেয়েছি। জঙ্গী ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী অবস্থানের জন্য ছাত্র লীগ নেতা, বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আরিফ রায়হান দীপ’কে নজরুল ইসলাম হলে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ বুয়েটের ছাত্র-ছাত্রীরা সকল সময় সন্ত্রাসকে তীব্রভাবে প্রতিহত করার ফলে ক্যাম্পাসে সনি, আবরার হত্যাকারীদের ঠাঁই হয়নি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমরা লক্ষ্য করছি যে, প্রগতির চাকাকে উল্টে দিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বুয়েটে বারবার বাধাগ্রস্থ করা হচ্ছে।
“ক্যাম্পাসে একটি চিহ্নিত গোষ্ঠি উগ্র মৌলবাদীদের মাধ্যমে এ পবিত্র ক্যাম্পাসকে ধীরে ধীরে মৌলবাদীদের আস্তানায় পরিণত করার চক্রান্তে লিপ্ত। তারই বহিঃপ্রকাশ হিসেবে গত ২৮ মার্চ রাষ্ট্রের সাংবিধানিক অধিকারকে ভূলুণ্ঠিত করে একটি চক্র ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে ব্যস্ত হয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ছাত্র-ছাত্রীদের নেতৃত্ব দানকারী বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে সরাসরি অভিযুক্ত করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতে চায়। আমরা বুয়েট ছাত্রলীগ এর প্রাক্তন নেতা-কর্মীরা, বুয়েট এর এই অসহনীয় দমবন্ধ অবস্থার উত্তরণ চাই। তার জন্য সর্বপ্রথম এ ক্যাম্পাসে অরাজকতাকারীদের বিরূদ্ধে একাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চাই। পাশাপাশি মুক্তবুদ্ধির আন্দোলনের দিশারী বুয়েট এর ছাত্র-ছাত্রীদের অধিকার আদায়ের জন্য অবিলম্বে ক্যাম্পাসে স্বাধীন মত ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশে ছাত্র রাজনীতি চর্চার মাধ্যমে ক্যাম্পাসকে উন্মুক্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর আহবান জানাচ্ছি।”

এ সময় পাঁচ দফা দাবি তুলেছেন বলেও জানান আবদুস সবুর। দাবি গুলো:
১. বিগত ২৮ মার্চ থেকে বুয়েটে অচলাবস্থা ও অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে বুয়েটে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাসহ একাডেমিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টিকারীদের তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২. ইমতিয়াজ রাব্বীর বিনা তদন্তে বেআইনীভাবে হল থেকে বহিষ্কারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে।
৩. বুয়েটের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে টাংগুয়ার হাওরে গ্রেফতারকৃত ২৪ উগ্র- মৌলবাদীদের বিরূদ্ধে বুয়েট কর্তৃপক্ষের একাডেমিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪. বুয়েটে নিষিদ্ধ হিজবুত তাহরির, শিবিরসহ উগ্র-মৌলবাদী গোষ্ঠীর অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে এবং এদের মদদ দানকারীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৫. ছাত্র রাজনীতি চালুর ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করার মাধ্যমে বুয়েটে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির উত্থান বন্ধ করতে হবে।