কক্সবাজারের রামুর ঈদগড়ের গহীন পাহাড়ে অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে র্যাব। এসময় দু’জন অস্ত্র তৈরির কারিগরসহ ৪ জনকে আটক করা হয়। উদ্ধার করা হয় বিপুলসংখ্যক অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) ভোররাতে ঈদগড় ইউনিয়নের ছগিরাকাটা তুলাতলী পাহাড়ে এই অস্ত্র কারখানার সন্ধান পায় র্যাব।
এসময় আটক করা হয় মাঈন উদ্দিন, জাফর আলম, লাল মিয়া ও সাহাবউদ্দিন নামের ৪ জনকে। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ ১০টি অস্ত্র ও ২২ রাউন্ড গুলি। তবে র্যাবের অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যায় কারখানাটির মালিক ও প্রধান অস্ত্র কারিগর মনিরুল হক।
র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক সাজ্জাদ হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে কারখানা গড়ে তুলে অস্ত্র তৈরি করে আসছিল একটি চক্র। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে কারখানা থেকে ২ জন এবং বসতবাড়ি থেকে ২ জনকে আটক করা হয়।
তিনি বলেন, মনিরুল হকের পৈতৃক পেশা অস্ত্র তৈরি। পৈতৃক সূত্র ধরেই সে অস্ত্র ব্যবসার সাথে জড়িত। চট্টগ্রাম এবং ঢাকা থেকে অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম এনে গহীন পাহাড়ে অস্ত্র তৈরি করত। তারা অস্ত্র তৈরি করতে করতে এক্সপার্ট হয়ে গেছে। কারখানাটির মালিক ও প্রধান অস্ত্র কারিগর মনিরুল হক সবচেয়ে দক্ষ।
নির্বাচনকালীন সময়ে অস্ত্রের চাহিদা বেড়েছে জানিয়ে র্যাবের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসা, নবী হোসাইন গ্রুপসহ বিভিন্ন ডাকাত, অপহরণের সাথে জড়িত গ্রুপের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করত তারা। নির্বাচনকালীন অস্ত্রের চাহিদা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।
তিনি জানান, মাঈন উদ্দিন পেশায় একজন পল্লি চিকিৎসক। তিনিই মিডিয়া ম্যান হিসেবে কাজ করত। মাঈন উদ্দিন এবং জাফর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছ থেকে ডিমান্ড নিয়ে মনিরুল হককে জানাতো। তারপর চাহিদা অনুযায়ী অস্ত্র তৈরি করে সরবরাহ করত। প্রতিটি অস্ত্রের দাম পড়তো ৩০-৫০ হাজার টাকা।

সন্ত্রাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এমন অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন।
ঈদগর সড়ক অপহরণ এবং ডাকাতির জন্য সবসময় আলোচনায় থাকে। সেখানকার মানুষ আতঙ্কে চলাচল করে সড়কটি দিয়ে। এমন অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তারা চান এমন অভিযান অব্যাহত থাকুক।