ঢাকা, ২৫ মার্চ – যেভাবে অধঃপতন হচ্ছে এ রকম চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই আমরা সবচেয়ে অসুখী দেশ হিসেবে গণ্য হতে পারি বলে আশংকা আছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলের নেতা জি এম কাদের।
সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর এজিবি কলোনি কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সুশাসনে অভাব হলে সুখের অভাব হয় এ কথা উল্লেখ করে বিরোধী দলের এই নেতা বলেন,
বাংলাদেশের সুখের অধঃপতন হচ্ছে। সরকারকে জবাবদিহিতা করার কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই। ফলশ্রুতিতে, দেখা যাচ্ছে সার্বিকভাবে দেশে প্রায় সকল পর্যায়ে জবাবদিহিতার অভাব। স্বজনপ্রীতি আর দলীয়করণের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সুশাসন নেই কোথাও। এ কারণেই দেশের মানুষ তার প্রাপ্য অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। তৃণমূল থেকে সর্বোচ্চ আসন পর্যন্ত কোথাও জবাবদিহিতা নেই। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, তাই বেড়েই চলছে অনিয়ম আর দুর্নীতি।
বিশ্বের ১৪৩টি দেশের মধ্যে এবার সুখী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২৯তম হওয়ার উদ্বেগ প্রকাশ করে জি এম কাদের বলেন, সুখ থেকে আমরা কতটা পিছিয়ে যাচ্ছি তা এই রিপোর্ট থেকেই প্রমাণ হয়। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতিবেশী নেপাল ৯৩, পাকিস্তান ১০৮, মিয়ানমার ১১৮, ভারত ১২৬ ও শ্রীলংকা ১২৮তম স্থানে। প্রতিবেশী সব দেশের থেকেই পিছিয়ে আছি আমরা। স্বাভাবিক কারণে, আফগানিস্তান ১৪৩তম হয়ে সবচেয়ে অসুখী দেশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
দুর্নীতির বিস্তার অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশে দুর্নীতির বিস্তার লাভ করছে প্রতিদিন। অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। সরকারিভাবে বেঁধে দেওয়া ২৯টি পণ্যের কোনোটিই নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে না। ভোক্তাদের অভিযোগ, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম কমানোর নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে। সরকারের আশ্বাসে আর মানুষের বিশ্বাস নেই।
তিনি আরও বলেন, যারা সিন্ডিকেট করে হাজার কোটি টাকা মুনাফা করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না সরকার। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন সরকার কী সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি? সরকার কী সিন্ডিকেটকে ভয় পায়? নাকি সিন্ডিকেটের সদস্যরাই সরকার পরিচালনা করে? সাধারণ মানুষ জানতে চায়, সিন্ডিকেটের সাথে সরকারের কী সম্পর্ক? কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি থেকে মানুষ মুক্তি চায়।
সরকার সমর্থকদের ছত্রছায়ায় কিশোর গ্যাং সৃষ্টি হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক মদদে কিশোর গ্যাং নামে উঠতি কিশোরদের জীবন ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। যারা কিশোর গাং সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হবে।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক জহিরুল আলম রুবেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, শেরিফা কাদের, মো. খলিলুর রহমান খলিল, ইঞ্জিনিয়ার মনির আহমেদ, মো. আরিফুর রহমান খান, সুলতান আহমেদ সেলিম প্রমুখ।
সূত্র: কালবেলা
আইএ/ ২৫ মার্চ ২০২৪