ঢাকা, ০৯ ফেব্রুয়ারি – ‘বাংলাদেশে ‘প্লাস্টিকের গণতন্ত্র’ চায় বলেই ভারত ‘একতরফা’ নির্বাচনে সমর্থন দিয়েছে’ এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বক্তব্যের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ভারত নাকি নির্বাচনে (৭ জানুয়ারি) সমর্থন দিয়েছে। ভারতের যে গণতন্ত্র সেটা আমরা জানি একটা শক্তিশালী গণতন্ত্র, ইস্পাতের গণতন্ত্র। ভারত কি তার পাশের দেশগুলোতে ‘প্লাস্টিকের গণতন্ত্র’ চায় নাকি যে পাতানো নির্বাচন, জালিয়াতির নির্বাচন, জনগণ প্রত্যাখান করেছে, বর্জন করেছে সেই নির্বাচন যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। গণতন্ত্রের ধারাবাহিতকার রক্ষা নির্বাচন হয়, এটাকে যদি ভারত সমর্থন জানায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায়… তাহলে ভাবতে হবে যে, ভারত নিজ দেশে শক্তিশালী গণতন্ত্র চায়, ইস্পাতের গণতন্ত্র চায়। আর বাংলাদেশে চায় প্লাস্টিকের গণতন্ত্র।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, তারা সরকারকে খুঁজে খুঁজে অভিনন্দন দিচ্ছে, কে তাদের সমর্থন দিচ্ছে এটা এত চেঁচিয়ে-চিৎকার করে তারা বলছেন। প্রমাণিত তারা জনবিচ্ছিন্ন একটি সরকার, জনসমর্থনহীন একটি সরকার… নির্বাচন বর্জনের ফলে তাদের এক ধরনের ক্ষমতা হারানোর ভীতি থেকে চিৎকার করছে বলে মনে করি। কূটনৈতিকভাবে তারা ব্যর্থ।
তিনি আরও বলেন, তারা (সরকার) ব্যর্থ একটি সরকার। তারা যেমন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারেনি, ঠিক তেমনি তারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারেনি, এটা দৃশ্যমান। আজ প্রযুক্তির যুগে প্রত্যেক মানুষ দেখছেন কীভাবে মর্টারশেল আসছে, বাংলাদেশের মানুষ মারা যাচ্ছে এবং সরকার নিশ্চুপ থাকছে, নির্বিকার থাকছে। একটা বিবৃতি পর্যন্ত দিতে পারে না। সারাদেশের মানুষ ভাবছে, আমাদের স্বাধীনতা আছে কি না, আমাদের সার্বভৌমত্ব আছে কি না, আমরা একটা স্বাধীন দেশের নাগরিক কি না…এটা নিয়ে মানুষের মনে সংশয় তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, কূটনৈতিক তৎপরতা এবং প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে অক্ষুন্ণ রাখা, এটাকে জোরালো ও শক্তিশালী করা এর কোনো দৃষ্টান্ত সরকার রাখতে পারেনি। এর আগে ১০ লাখ রোহিঙ্গা এদেশে ঢুকলো, তারা শরণার্থী শিবিরে এখনো অবস্থান করছে। এদের একটা লোকও নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে পারেনি। দেশে জনসমর্থনহীন সরকার থাকলে পরে সেই সরকারকে যে বিশ্বের কেউ পাত্তা দেই না সেটা আবার নতুন করে প্রমাণ করেছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, কারা হেফাজতে নির্মম নির্যাতনের শিকার বিএনপির নেতাকর্মীদের কারও না কারও মৃত্যুর সংবাদ আসছে। গত তিন মাসে কারাগারে নির্যাতন করে বিএনপির প্রায় ১৩ জন নেতার মৃত্যু হয়েছে কারা হেফাজতে। প্রত্যেকটি মৃত্যু পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। বৃহস্পতিবার বিনা অপরাধে রংপুর কারাগারে বন্দি গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারি মহিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলামকে নির্যাতন করে বিনা চিকিৎসায় হত্যা করা হয়েছে। নিপীড়নের সব মাত্রা প্রয়োগ করা হচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর একজনের নির্দেশে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আমিনুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: জাগো নিউজ
আইএ/ ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪