এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং এবং চীনের ৫০ জন ব্যক্তি, কোম্পানি ও জাহাজের উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তারা ইরানের তেল ও তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) রপ্তানিতে সহায়তা করেছে। এরমধ্যে বাংলাদেশে চালান নিয়ে আসা জাহাজও রয়েছে।
দীর্ঘ আলোচনার পর চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর জাহাজগুলোকে পুনরায় গ্যাস স্থানান্তরের অনুমতি দেওয়া হলেও, ভেসেল-ট্র্যাকিং তথ্য অনুযায়ী এগুলো এখনও চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করা অবস্থায় রয়েছে।
যদিও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় কোনো বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান বা সরকারি সংস্থার নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি, তবে এই ধরনের চালান ও লেনদেনের মাধ্যমে বাংলাদেশকেও এখন ওয়াশিংটনের সম্প্রসারিত নজরদারি ও বাস্তবায়ন ব্যবস্থার আওতায় ধরা হচ্ছে।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের মতে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে অন্তত দুই ডজন ছায়া বহর (স্যাডো ফ্লিট) জাহাজ, যেগুলো ইরানি তেলের উৎস গোপন করে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে চলছিল। এছাড়াও নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে চীনে অবস্থিত একটি অপরিশোধিত তেল টার্মিনাল এবং একটি বেসরকারি চীনা তেল শোধনাগার।
বিভাগ জানায়, এই প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি ইরান সরকারকে সহায়তা করে বিলিয়ন ডলারের তেল ও গ্যাস পণ্য রপ্তানির ব্যবস্থা করেছে। মার্কিন প্রশাসন দাবি করেছে, এটি ইরানের অর্থনীতির একটি প্রধান খাতকে লক্ষ্য করে সর্বোচ্চ চাপের অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞাগুলোর আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কোম্পানিগুলোর সম্পত্তি জব্দ হবে এবং মার্কিন নাগরিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সঙ্গে লেনদেন করতে পারবে না।
এ প্রসঙ্গে ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেন, আমরা ইরান সরকারের সেই অর্থনৈতিক নেটওয়ার্কগুলো ভেঙে দিচ্ছি, যা তারা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর পেছনে ব্যবহার করে থাকে। ইরানের এসব কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি
এর আগে, জানুয়ারি থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ইরানের তেল ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ১৬৬টি জাহাজের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞায় চীনের আরও একটি তেল টার্মিনাল এবং একটি বেসরকারি শোধনাগারকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর সেপ্টেম্বরে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হয়েছে, যার ফলে দেশটির অর্থনীতি আরও চাপে পড়ে। ইরানে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে, খাদ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে এবং স্থানীয় মুদ্রা রিয়াল রেকর্ড পরিমাণে মূল্য হারিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এসব পদক্ষেপ ইরানের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে দুর্বল করার পাশাপাশি, তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও মধ্যপ্রাচ্যে তার প্রভাব বিস্তারের উদ্যোগকে রুখতে আন্তর্জাতিক চাপের একটি অংশ।