পূর্বভারতে বঙ্গোপসাগরের তীরে আদানি গ্রুপ যে ক্রমেই বাড়াচ্ছে তাদের অবস্থান। এবার তারা ভারতের অন্যতম বড় বন্দরটি কিনে ফেলল বঙ্গোপসাগরের পাড়ে। শাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠীর থেকে ৩ হাজার ৩৫০ কোটি রুপি দিয়ে গোপালপুর বন্দরের সিংহভাগ অংশীদারিত্ব নিজেদের নামে করেছে আদানি।
মঙ্গলবার ২৬ মার্চ হিন্দুস্তান টাইমস’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত কয়েক মাস ধরেই নিজেদেরকে বন্দর বাণিজ্য থেকে গুটিয়ে নিচ্ছে শাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠী।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে মহারাষ্ট্রের ধরমতার বন্দরের ৫০ শতাংশ অংশীদারিত্ব বিক্রি করেছিল জেএসডাব্লু ইনফ্রাস্ট্রাকচারের কাছে। আর এবারে গোপালপুর বন্দরের ৫৬ শতাংশ অংশীদারিত্ব আদানিদের বেচে দিল শাপুরজি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে শাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠীর অধীনে শুধুমাত্র আর একটি বন্দরই আছে। সেটি হল গুজরাটের ছারা বন্দর। সেই বন্দরটি এখন নির্মীয়মাণ।
জানা যায়, নিজেদের ব্যবসার একাংশ বিক্রি করে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ শোধের পরিকল্পনা নিয়েছে শাপুরজি গোষ্ঠী। নিজেদের ব্যালেন্স শিটের অঙ্ক মেলাতে গত কয়েক বছরে ১১ হাজার কোটির সম্পত্তি বেচে দিয়েছে এই গোষ্ঠী।
শুধু বন্দরই নয়, এরপর অ্যাফকন ইনফ্রাস্ট্রাকচারের শেয়ারও আইপিও’র মাধ্যমে বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে শাপুরজি গোষ্ঠীর। এই সংস্থাটিকে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের থেকে কিনেছিল তারা। বর্তমানে অ্যাফকনের বাজার মূল্য দু’বিলিয়ন ডলার বা ১৬ হাজার ৬৮৫ কোটি রুপি।
গোপালপুর বন্দরটিকে গত ২০১৭ সালে কিনেছিল শাপুরদি গোষ্ঠী। সারা ইন্টারন্যাশনাল এবং মহিমানন্দা মিশ্রর থেকে এই বন্দরটি কিনেছিল তারা। বর্তমানে বার্ষিক ১২ থেকে ১৫ মিলিয়ন টন পণ্য এই বন্দরে ওঠা-নামা করে। এই বন্দরের ৫৬ শতাংশ অংশীদারিত্ব ছিল শাপুরজিদের কাছে। তারা নিজেদের গোটা অংশ বিক্রি করে দিচ্ছে আদানির কাছে।
গোপালপুর বন্দরের বাকি ৪৪ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে ওড়িশা স্টিভিডোরসের কছে।
আদানিরা ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে নিজেদের সব বন্দর মিলিয়ে প্রায় ১০৯ মিলিয়ন পণ্য ওঠা-নামা করিয়েছে। গত কয়েক মাসে এটি পুদুচেরির করাইকাল বন্দর কিনেছে। আর সুইস সংস্থার কাছে এন্নোর বন্দরের একটি টার্মিনাল বিক্রি করেছে। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পোর্ট নেটওয়ার্ক রয়েছে আদানিদের। ভারত, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, ইজরায়েলে বন্দর রয়েছে আদানিদের। এখন আফ্রিকাতেও একটি বন্দর কিনতে চাইছে তারা।