ফেনীসহ বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

ফেনীসহ বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

টানা বর্ষণ এবং মুহুরি ও সেলোনিয়ার নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বিশেষ করে জেলার পরশুরাম উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম ও সিলেটেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

বুধবার (৯ জুলাই) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সর্বশেষ তথ্যে বলা হয়, ফেনী জেলার মুহুরি ও সেলোনিয়া নদীসমূহের পানি সমতল বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এতে বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় নদীসমূহের পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে ও ফেনী জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে, যা পরবর্তীতে হ্রাস পেয়ে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি লাভ করতে পারে। এই অববাহিকায় আগামী ২৪ ঘণ্টা ভারি ও পরবর্তী দুই দিন মাঝারি থেকে মাঝারি-ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থানীয় অফিস বলছে, জেলায় ৭ জুলাই সকাল ৯টা থেকে ৯ জুলাই সকাল ৯টা পর্যন্ত ৪৮ ঘন্টায় ৫৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সর্বশেষ পাওয়া তথ্য মতে, মুহুরি নদীর পরশুরাম গেজ স্টেশন ৮ জুলাই সকাল ৬টায় পানির লেভেল ৬.৯৭ মিটার, রাত ৮টায় ১৩.৮৫ মিটার ছিল। বিপদসীমা ১২.৫৫ মিটার, এই সময়ে প্রায় ৭ মিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বিপদসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে।

দীর্ঘ সময় বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় পরশুরামে মুহুরী নদীর ডান তীরে জিরো পয়েন্টে বাংলাদেশ-ভারত টাই বাঁধের সংযোগস্থল দিয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। মুহুরী নদীর উভয় তীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে জঙ্গলগোনা ২টি (মুহুরী, ডান তীর), উত্তর শালধর একটি (মুহুরী নদীর ডান তীর), নোয়াপুর একটি (মুহুরী নদীর বাম তীর), পশ্চিম অলকা একটি (মুহুদরী নদীর বাম তীর), ডি এম সাহেবনগর একটি (সিলোনিয়া নদীর বাম তীর), পশ্চিম গদানগর একটি (সিলোনিয়া নদীর বাম তীর), দক্ষিণ বেড়াবাড়ীয়া একটি (কহুয়া নদীর বাম তীর), পূর্ব সাতকুচিয়া একটি (কহুয়া নদীর ডান তীর), উত্তর টেটেশ্বর একটিসহ (কহুয়া নদীর বাম তীর) ১০টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে বুধবার সকাল থেকে ফেনী-পরশুরাম ও উপজেলা সদরের সঙ্গে আঞ্চলিক সড়কগুলোয় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্যাদুর্গত এলাকার লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে শুরু করেছে।

চট্টগ্রাম ও সিলেটের পরিস্থিতি
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সর্বশেষ তথ্যে বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় হালদা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং চট্টগ্রাম জেলার নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে, যা পরবর্তীতে হ্রাস পেতে পারে।

এছাড়াও চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী, সাঙ্গু ও গোমতী নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে বন্যা পূর্বাভাসে বলা হয়। তবে মাতামুহুরি নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। আগামী এক দিন গোমতী নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে, অপরদিকে সাঙ্গু ও মাতামুহুরি নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে। তবে পরবর্তী দুই দিন উক্ত সকল নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়।

অন্য দিকে, সিলেট বিভাগের মনু, ধলাই ও খোয়াই নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘন্টা নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে; পরবর্তী দুই দিন নদীসমূহের পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে।

Scroll to Top