ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ডিআইইউ) সাংবাদিক সমিতির কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ এবং সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত ১০ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সংগঠনের সভাপতি আল-সাদী ভূঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি এক যৌথ বিবৃতিতে বহিষ্কারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তারা অবিলম্বে ১০ সাংবাদিকের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে ক্যাম্পাসে বস্তুনিষ্ঠ ও স্বাধীন সাংবাদিকতা চর্চার অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিতেরও দাবি জানিয়েছেন।
ডিআইইউ প্রশাসন নিজেদের অন্যায়-অপকর্ম ধামাচাপা দিতে স্বাধীন সাংবাদিকতার টুঁটি চেপে ধরার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে বলেও বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্ভরযোগ্য সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, ২০২০ সাল থেকে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে ডিআইইউ সাংবাদিক সমিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অনিয়ম, দুর্নীতি ও শিক্ষার্থীদের হয়রানির মতো জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের কারণে এর আগেও বেশ কয়েকবার ডিআইইউ সাংবাদিক সমিতি বন্ধের পাঁয়তারা করা হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (১৩ মার্চ) সমিতির নতুন কমিটি গঠনের পর এর কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ ও সংশ্লিষ্ট ১০ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে ডিআইইউ প্রশাসন। সাংবাদিক সমিতির মতো একটি পেশাজীবী সংগঠনের শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও নজীরবিহীন। এ ঘটনা দেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে অত্যন্ত খারাপ উদাহরণ তৈরি করেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সাংবাদিক সমিতির বন্ধের নির্দেশ এবং শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে ডিআইইউ প্রশাসন ক্যাম্পাসকে চূড়ান্তভাবে সাংবাদিক শূন্য করে অন্যায়-অপকর্মের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে বলে আমরা মনে করি। সাংবাদিকরা নৈতিক ও পেশাগত দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে নিরপেক্ষভাবে সংবাদ পরিবেশন করে থাকেন। এক্ষেত্রে তাদের প্রতি কোনো অভিযোগ থাকলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু অন্যায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সাংবাদিকতাকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা সংবিধান স্বীকৃত সাংবাদিকতার স্বাধীনতার ধারণার পরিপন্থী ও সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের নামান্তর।
তারা বলেন, দেশের অন্য সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে প্রশাসন কর্তৃক সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হলেও ডিআইইউ কর্তৃপক্ষের ধৃষ্টতাপূর্ণ এমন আচরণ অত্যন্ত আপত্তিকর এবং অনভিপ্রেত। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, অবিলম্বে ১০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নেওয়া অন্যায় বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করবেন এবং সংবিধানকে সম্মান জানিয়ে ক্যাম্পাসে সাংবাদিকবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করবেন। অন্যথায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি দেশের অন্য ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের নিয়ে কঠোরতম কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।
যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে, তারা হলেন, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি কালাম মুহাম্মদ (এশিয়ান টিভি), সাধারণ সম্পাদক রেজোয়ানুল হক (একুশে সংবাদ), সহসভাপতি সাদিয়া তানজিলা সানভি (দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস), যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাওছার আলী (রাইজিংবিডি), সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ (দৈনিক ভোরের ডাক), দপ্তর, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. রাকিবুল ইসলাম (দৈনিক আমার সংবাদ/ক্যাম্পাস টাইমস), কোষাধ্যক্ষ জাকারিয়া হুসাইন (বার্তা বিচিত্রা) ও কার্যনির্বাহী সদস্য সম্রাট (প্রিয়দেশ২৪), ইসমাম হোসেন (দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন) ও মুছা মল্লিক (ঢাকা পোস্ট)।