পাহাড়ি জঙ্গলে পর্যটকের উপর ভালুকের হামলা

পাহাড়ি জঙ্গলে পর্যটকের উপর ভালুকের হামলা

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

পর্যটকের উপর হামলা করায় ইতালির পাহাড়ি জঙ্গলে এক খয়েরি মা ভালুককে গুলি করে হত্যা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে পশুপ্রেমিরা।

ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

জানা যায়, ইতালির উত্তরে আলপসের পাদদেশে ট্রেনটো অঞ্চল। পাহাড়ি জঙ্গলে ঘেরা এই অঞ্চলেই বাস করছিল একটি খয়েরি ভালুক। মা ভালুকটি গত বেশ কিছুদিন ধরে সেখানে পর্যটকদের উপর হামলা চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ। কিছুদিন আগে এক ফরাসী পর্যটকের উপর সে ভয়াবহ হামলা চালায়। এরপর থেকেই ওই ভালুকের সন্ধানে ঘুরছিল স্থানীয় প্রশাসন। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) তাকে চিহ্নিত করে গুলি করে হত্যা করা হয়।

ওই ভালুকটির নাম ছিল কেজেআই। তার সঙ্গে তিনটি বাচ্চা ছিল বলে জানা গেছে।

পশুপ্রেমীদের দাবি, ওই শিশু ভালুকগুলিকে রক্ষা করার জন্য বার বার আক্রমণ চালাচ্ছিল মা ভালুক। তাদের অভিযোগ, সম্প্রতি ওই অঞ্চলে পর্যটকদের যাতায়াত বেড়ে গেছিল। সে জন্য নিজেকে এবং শিশুদের সুরক্ষিত বলে মনে করছিল না ওই মা ভালুকটি।

স্থানীয় প্রশাসন জানায়, গত কিছুদিনে অন্তত সাতবার পর্যটকদের উপর আক্রমণ চালিয়েছে ওই ভালুকটি। তবে ৪৩ বছরের ফরাসী পর্যটকের উপর আক্রমণ ছিল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। হাতে এবং পায়ে ক্ষত নিয়ে কোনোভাবে এলাকা ছেড়ে পালান ওই পর্যটক। ফোন করে সাহায্য চান।

ইতালির জাতীয় পরিবেশমন্ত্রীও এই ঘটনার বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেছেন, স্থানীয় প্রশাসন যা করেছে, তার সঙ্গে তিনি সহমত নন। এভাবে একটি ভালুক মেরে সমস্যার সমাধান হবে না। প্রয়োজন ভালুকগুলিকে স্টেরিলাইজ করা। তাদের বংশবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

পশুপ্রেমী দলগুলির বক্তব্য, এই ঘটনার পর কার্যত অনাথ হয়ে গেল তার সন্তানেরা। তাদের দেখভাল কী করে করা হবে, তা নিয়ে প্রশাসনের কোনো পরিকল্পনা নেই।

আন্দোলনকারীদের দাবি, রাতারাতি ভালুকটিকে মারার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগটুকুও তারা পায়নি। অতীতে এমন ঘটনা ঘটেছে। পশুপ্রেমী সংস্থার মামলার জেরে প্রশাসন জারি করা নির্দেশ বদলাতে বাধ্য হয়েছে।

২০২৩ সালে ওই একই এলাকায় আরেকটি ভালুককে মারার নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু পশুপ্রেমী সংস্থাগুলির উদ্যোগে মামলা হয়। আদালত শেষপর্যন্ত ভালুক হত্যার উপর স্থগিতাদেশ জারি করে। এবারও সময় এবং সুযোগ থাকলে তা করা সম্ভব হতো বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের বক্তব্য, ওই এলাকাটি ভালুকের থাকার জায়গা। গত কয়েকবছরে সেখানে অবাধে পর্যটকেরা ঘুরছেন। প্রশাসনের উচিত, পর্যটনে রাশ টানা।

Scroll to Top