নিলামে বিক্রি হলো না অং সান সু চি’র বাড়ি | চ্যানেল আই অনলাইন

নিলামে বিক্রি হলো না অং সান সু চি’র বাড়ি | চ্যানেল আই অনলাইন

নিলামে বিক্রি হলো না মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী ও নোবেল জয়ী অং সান সুচি’র বাড়ি। বাড়িটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সুচি’র ভাইয়ের সাথে বিরোধের কারণে চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট বাড়িটি নিলামে তোলার আদেশ দেন। 

বিবিসি জানিয়েছে, নিলামে বাড়িটিসহ মোট সম্পত্তির দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯০ মিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। নিলামে কেউ অংশগ্রহণ না করায় কর্তৃপক্ষ আজ স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় নিলাম বন্ধ করে দেয়।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চি’র নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। ওই দিনই সু চি’কে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সু চি’র ৩৩ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বর্তমানে কারাগারের নির্জন কক্ষে বন্দি রয়েছেন অং সান সু’চি।

পৈত্রিক বাড়ির মালিকানা নিয়ে সু’চি ও তার বড় ভাইয়ের মধ্যে কয়েক দশক ধরে পারিবারিক বিরোধ চলে আসছে। এর আগে ২০০০ সালে সামরিক সরকারের সময়ে সু’চি যখন গৃহবন্দি ছিলেন, তখন তার ভাই উ অং সান উ বাড়িটির মালিকানা দাবি করে মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতে মামলাটি খারিজ হয়ে গেলে তিনি বাড়িটির যৌথ মালিকানা দাবি করে আরেকটি মামলা করেন।

সেই মামলায় ২০১৬ সালে ইয়াঙ্গুনের একটি আদালত বাড়িটির অর্ধেক জমির মালিক অং সান সু’চি ও বাকি অর্ধেক জমির মালিকানা তার ভাইয়ের বলে রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে উ অং সান উ উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিলে তিনি বাড়িটি নিলামে তুলতে এবং দামের একটি অংশের দাবি করেন। পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট উ অং সান উর পক্ষে রায় দেন।

অং সান সু’চির এ পৈত্রিক বাড়িটি ইয়াঙ্গুনের ৫৪ ইউনিভার্সিটি অ্যাভিনিউ এর ইনিয়া লেকের তীরে অবস্থিত। বাড়িটি মিয়ানমারের গণতন্ত্রের লড়াইয়ের জন্য একটি ঐতিহাসিক স্থান এবং জাতীয় প্রতীক হিসেবে পরিচিত। আগের জান্তা শাসনামলে এই বাড়িটিতেই দীর্ঘ ১৫ বছর গৃহবন্দি ছিলেন অং সান সু’চি। ঔপনিবেশিক আমলের এ বাড়িটির সামনে দাঁড়িয়েই গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার পক্ষে বক্তব্য দিতেন নোবেলজয়ী এ নেত্রী। ২০১১ ও ২০১২ সালে এই বাড়িতেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনকে স্বাগত জানিয়েছিলেন।

১৯৪৭ সালে ১ দশমিক ৯ একরের এই জমিটি রাষ্ট্রীয়ভাবে অনুদান পেয়েছিলেন অং সান সুচির মা খিন চি। সুচির বাবা ছিলেন মিয়ানমারের স্বাধীনতার নায়ক জেনারেল অং সান। তাকে হত্যার পর রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জমিটি পান সু চি’র মা। ২০২২ সালে বাড়িটিকে জাতীয় ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে জান্তা বিরোধী মিয়ানমারের ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট।

Scroll to Top