শীতে ফ্লু ভাইরাস, রাইনোভাইরাস এবং শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাসের মতো অন্যান্য মৌসুমি ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যায়। তাদের সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে কোভিড-১৯ সৃষ্টিকারী সার্স-কোভ-২ করোনাভাইরাসের আরও একটি পরিবর্তিত উপধরন জেএন.১। আমরা দেখেছি, করোনার অমিক্রন ধরনের বিভিন্ন উপধরন (যেমন এইচভি.১, বিএ ২.৮৬) গত বছর (২০২২) এবং চলতি বছরও দাপট দেখিয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রাণবিয়োগও ঘটেছে করোনায় আক্রান্ত লক্ষাধিক মানুষের।
এর মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাস সার্স-কোভ-২–এর এই অতিসংক্রামক জেএন.১ উপধরন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ বিশ্বজুড়ে অনেকের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) সতর্ক করে বলেছে, এবারের শীতে জেএন.১-এর সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাবে, যার প্রমাণ ইতিমধ্যেই মিলেছে। এই উপধরন যুক্তরাষ্ট্রে সেপ্টেম্বর মাসে ধরা পড়েছিল, যখন এর সংক্রমণের হার ছিল মাত্র ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। এর সংক্রমণ ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এসে দাঁড়ায় ২১ দশমিক ৩ শতাংশে। কিন্তু মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যবধানে (২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত) এই সংক্রমণের হার এসে দাঁড়িয়েছে ৪৪ দশমিক ২ শতাংশে।
সংক্রমণে ডিসেম্বরে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৫০০ মানুষ, যা প্রমাণ করে যে এই উপধরন নিঃসন্দেহে আরও বেশি সংক্রমণশীল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এটিকে কড়া নজরে রেখেছে এবং করোনার এই উপধরনকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ বা ‘আগ্রহের বৈকল্পিক’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করেছে। স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন ধরন জেএন.১-এর লক্ষণ আগের ধরনগুলোর মতোই। যেমন জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা, মাথাব্যথা, স্বাদ বা গন্ধ হারানো, ক্লান্তি ইত্যাদি। এ ছাড়া গুরুতর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, ডায়রিয়া এবং বিভ্রান্ত বোধ করা।