দেশের সব ভাষা রক্ষা করতে হবে

দেশের সব ভাষা রক্ষা করতে হবে

বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের মধ্যে প্রায় ৪০টি পৃথক বৈশিষ্ট্যের ভিন্ন ভিন্ন ভাষা প্রচলিত আছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সাঁওতাল, চাকমা, গারো (মান্দি), ত্রিপুরা (ককবরক), সাদরি, খেয়াং, খুমি, লুসাই, মুন্ডা, মণিপুরি (মেইতেই ও বিষ্ণুপ্রিয়া), ম্রো, পাংখোয়া, হাজং, পাত্র, খাস কোল, কোডা, সৌরা প্রভৃতি। এই ভাষাগুলো পৃথিবীর প্রধান চারটি ভাষা-পরিবারের (অস্ট্রো-এশিয়াটিক, তিব্বতি-চীন, দ্রাবিড় ও ইন্দো-ইউরোপীয়) সদস্য। ভিন্ন জনগোষ্ঠীর ভিন্ন ভাষার স্বকীয়তা দেশের সংস্কৃতিকে করেছে সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময়। আমরা জানি, বাংলাদেশে বা বাংলাভাষী অঞ্চলে একেক এলাকায় বাংলা ভাষার উপভাষিক বৈচিত্র্য রয়েছে৷ যেমন সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল, চট্টগ্রাম বা নোয়াখালীতে একই বাংলা ভাষা, কিন্তু তাঁরা ভিন্নভাবে কথা বলেন। তাঁদের ভাষায় ধ্বনিতাত্ত্বিক এবং শব্দভান্ডারের পার্থক্য রয়েছে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ক্ষেত্রেও তা ব্যতিক্রম নয়। চারটি ভাষা পরিবারের মধ্যে কয়েকটি ভাষা পরস্পর এতটাই ঘনিষ্ঠ যে সেগুলোকে উপভাষিক বৈচিত্র্য বলা যায়। ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় অবস্থান করার কারণেও এদের মধ্যে উপভাষিক বৈচিত্র্য লক্ষ করা যায়। তবে বাংলাদেশের এসব ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জাতির মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি ভাষার নিজস্ব লিপি রয়েছে। যেমন চাকমা, মারমা, রাখাইন, মেইতেই মণিপুরি, ম্রো। গারো, খাসি, বম, খুমি, পাংখোয়া, লুসাই, ককবরক, সাঁওতাল (আংশিক) ইত্যাদি ভাষা লেখা হয় আত্তীকৃত রোমান বর্ণমালায়। বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি, কোল, হাজং, সাঁওতাল (আংশিক), মুন্ডা, সাদরিসহ উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ভাষা লেখার জন্য ব্যবহার করা হয় বাংলা বর্ণমালা। চাক ও ম্রোরা তাদের নিজেদের উদ্ভাবিত লিপি দিয়ে পাঠদান শুরু করেছে সীমিত পরিসরে।

Scroll to Top