দুগিনের দুনিয়ায় ‘থাকা’, ‘না থাকা’

দুগিনের দুনিয়ায় ‘থাকা’, ‘না থাকা’

‘অস্তিত্বহীন’ রাশিয়াকে ‘অস্তিত্বশীল’ করার জন্য দুগিন ‘ফোর্থ পলিটিক্যাল থিওরি’ বা ‘চতুর্থ রাজনৈতিক তত্ত্ব’ নামের একটি তত্ত্ব প্রচার করে যাচ্ছেন।

‘দ্য ফোর্থ পলিটিক্যাল থিওরি’ শিরোনামে তাঁর লেখা বইয়ে তিনি এই তত্ত্ব ব্যাখ্যা করেছেন। বইটি রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে অবশ্যপাঠ্য। দুগিন তাঁর এই বইয়ের ভূমিকার শিরোনামও দিয়েছেন ‘টু বি অর নট টু বি?’

এই বইয়ে দুগিন বলছেন, বিশ শতকে তিনটি প্রধান রাজনৈতিক তত্ত্ব ছিল:

প্রথম রাজনৈতিক তত্ত্ব হলো উদারবাদ, দ্বিতীয় রাজনৈতিক তত্ত্ব হলো সমাজতন্ত্র এবং তৃতীয় রাজনৈতিক তত্ত্ব হলো ফ্যাসিবাদ।

এর মধ্যে সমাজতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদকে হারিয়ে উদারবাদ বিংশ শতক থেকে বিশ্বজুড়ে রাজত্ব করছে।

দুগিনের মতে, রাশিয়াকে ‘অস্তিত্বহীন’ থেকে ‘অস্তিত্বশীল’ করতে হলে এই তিন তত্ত্বের বাইরে গিয়ে ‘চতুর্থ রাজনৈতিক তত্ত্ব’ গ্রহণ করতে হবে।

এই তত্ত্ব নিয়ে দুগিন বিশদে যত কথা বলেছেন, তার চুম্বক কথা হলো শাসন, আইন, মানবাধিকার—এগুলো স্থানীয় সংস্কৃতির বিষয়।

এই থিওরি অনুসারে রাশিয়াই ঠিক করবে কোনটি মানবাধিকারের মধ্যে পড়বে, আর কোনটি পড়বে না। যুক্তরাষ্ট্রে বা পশ্চিমি সমাজে যেটিকে মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, রাশিয়ায় সেটিকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে ধরা হতে পারে।

পশ্চিম যে উদারবাদ তথা পুঁজিবাদের অনুসরণ করে, সেখানে ব্যক্তি সত্তার স্বাধীনতাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়। পারিবারিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিসরে ব্যক্তি কীভাবে জীবন চালাবে, তা নিয়ে রাষ্ট্র মাথা ঘামায় না।

কিন্তু দুগিনের প্রচারিত ‘চতুর্থ রাজনৈতিক তত্ত্ব’ সমাজের মৌলিক নিয়মনীতি বা ঐতিহ্যকে ব্যক্তিরও ওপরে গুরুত্ব দেয়।

দুগিনের প্রচারিত এই তত্ত্ব মূলত অর্থোডক্স ক্রিশ্চিয়ানিটিকে দারুণভাবে ধারণ করে এবং ব্যক্তিস্বাধীনতাভিত্তিক পশ্চিমা সংস্কৃতিকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করে।

যেমন লিঙ্গ ইস্যুতে পশ্চিমা উদারবাদ যে ব্যক্তিস্বাধীনতা অনুমোদন করে, চতুর্থ রাজনৈতিক তত্ত্ব তা রাশিয়ায় অনুমোদন করে না।

Scroll to Top