এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
অব্যাহতির পর তথ্য গোপন করে পুনরায় উচ্চ পদে যোগদান, ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তার ও কারাদণ্ডের তথ্য গোপন করে বেতন-ভাতা গ্রহণসহ বিভিন্ন অভিযোগে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফাতেমা দোজার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার বিচার প্রক্রিয়া থমকে আছে। তদন্ত প্রক্রিয়ায় অসহযোগিতা করে মামলার নিষ্পত্তি বিলম্বিত করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ডা. ফাতেমা দোজার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ঘেঁটে জানা গেছে, জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল থেকে ২০১২ সালে চাকরি থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন তিনি। কিন্তু ২০১৩ সালে ফের সেখানে উচ্চতর পদে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন।
চাকরিতে অব্যাহতি চাওয়ার পরে বিষয়টি তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেননি। এর আগে ২০০৪ সালে গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনায় ৪ মাস ১ দিন কারাভোগ করেছেন। কিন্তু, সেই তথ্য গোপন করে ব্যক্তিগত অসুবিধার কথা উল্লেখ করে অর্জিত ছুটির আবেদন করে বেতন-পদোন্নতিসহ সকল সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন। এছাড়া আমেরিকায় আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণপত্র পরিবর্তন করে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে বিভ্রান্ত করা চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, এসব অভিযোগ ভিত্তিতে ২০২৩ সালের নভেম্বরে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ অনুযায়ী ডা. ফাতেমার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। একইসঙ্গে তার এসব কর্মকাণ্ডের জন্য কারণ দর্শাতে বলা হয়। তবে ডা. ফাতেমা দোজা নোটিশের জবাব না দেওয়া ২০২৪ সালের ১০ মার্চ তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে কেন চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না তা জানতে চেয়ে ফের নোটিশ দেওয়া হয়।
গত বছরের ৫ অক্টোবরে এই নোটিশের জবাব দেন ডা. ফাতেমা দোজা। লিখিত জবাবে তিনি ফৌজদারি মামলার আসামি হওয়ার কথা স্বীকার করলেও কারাদণ্ডের এড়িয়ে গেছেন। মামলা নিষ্পত্তির জন্য ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন কিনা কিংবা কতদিন জেলহাজতে বন্দী ছিলে তা জানতে চাওয়া হয়। তবে ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও এর জবাব দেননি ডা. ফাতেমা দোজা। ফলে থমকে আছে মামলার নিষ্পত্তি।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে কল করে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোনো সাড়া দেননি।
মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ডা. ফাতেমা তথ্য প্রদান না করে সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা পরিপন্থী কাজ করেছেন। তবে তিনি তথ্য প্রদান না করলেও চলমান বিভাগীয় মামলা বিধি মোতাবেক নিষ্পত্তি করা হবে।