আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুল ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অভিযুক্ত দুই চিকিৎসককে গ্রেফতারে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আন্দোলন। এই সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করা না হলে ইউনাইটেড হাসপাতাল ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হয়।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে সংগঠনটির পক্ষে এ ঘোষণা দেন সমন্বয়ক নাজমুল হাসান।
তিনি বলেন, ‘আয়ানের এই অপমৃত্যুর মাধ্যমে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থার দীনতা প্রকাশ পেয়েছে। আয়ানের জায়গায় আজকে আমি, আপনি, আমাদের পরিবারের যে কেউ থাকতে পারতো। দেশের এই দৈন্য চিকিৎসার বিরুদ্ধে তাই আমাদের সবাইকে সজাগ হতে হবে।’
নাজমুল হাসান বলেন, ‘ভুল চিকিৎসার জন্য ইডেন কলেজের আমাদের এক বোন ও তার বাচ্চা গতবছর সেন্ট্রাল হাসপাতালে মৃত্যু হয়। সে ঘটনার কাঙ্ক্ষিত কোনো বিচার আমরা পাইনি।’
মানববন্ধনে শিশু আয়ানের চাচা মো. মানিক বলেন, ‘আয়ানকে হারিয়ে আমাদের বুক যেভাবে খালি হয়েছে আর কারও যেন না হয়। আমরা ধারণা করেছিলাম আয়ানের মৃত্যু আরও আগেই হয়েছে কিন্তু তারা সেটা প্রকাশ করেনি। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন তারা সেটা প্রকাশ করে যাতে ঘটনা ধামাচাপা যায়। এরপর তারা আমাদেরকে ৬ লাখ টাকার বিল ধরিয়ে দেয়।’
জানা যায়, গত ৩১ ডিসেম্বর সকালে বাড্ডার মাদানী এভিনিউ এলাকার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আয়ানকে সুন্নতে খৎনা করাতে নিয়ে যায় তার পরিবার। ওইদিনই সকালে ডাক্তারদের পরামর্শে আয়ানকে অ্যানেসথিসিয়া দিয়ে খৎনা করা হয়। সকাল ৯ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত আয়ানের জ্ঞান না ফেরায় তার বাবা জোর করে অপারেশন রুমে ঢুকে দেখেন আয়ানকে সিপিআর (কৃত্তিম শ্বাস দেওয়ার প্রক্রিয়া) দেওয়া হচ্ছে। আর বুকের দুই পাশে দুইটা ছিদ্র করা এবং বুকের ভেতরে পাইপ ঢুকানো।
এরপর আয়ানের অবস্থা আরও গুরুতর হয়। তাৎক্ষণিক ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাড়িতে করেই গুলশান-২ এ ইউনাইটেড হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ৮ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রোববার (৭ জানুয়ারি) রাত ১১ টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর গুলশান-২ এ ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যায় শিশু আয়ান। এরপর রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে দাফন করা হয় পাঁচ বছরের আয়নকে।