টাঙ্গাইলের শাড়ির পর এবার বাংলাদেশের মসলিন শাড়ির স্বীকৃতি চায় ভারত – DesheBideshe

টাঙ্গাইলের শাড়ির পর এবার বাংলাদেশের মসলিন শাড়ির স্বীকৃতি চায় ভারত – DesheBideshe

ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি – এবার ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মসলিন শাড়িকে নিজেদের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে দাবি করছে ভারত। এ বিষয়ের সমালোচনা করে বাংলাদেশকে ভারতের এমন দাবির আপত্তি জানাতে হবে বলে মত দিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডির কার্যালয়ে ‘টাঙ্গাইল শাড়িকে পশ্চিমবঙ্গের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি: প্রক্রিয়া, পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এ মত দেন তিনি।

এর আগে, টাঙ্গাইল শাড়ির স্বত্ব দাবি করে ভারত।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর ‘বেঙ্গল মসলিন’ শিরোনামে জিআই স্বত্বের আবেদন করে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার। ঐ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এরই মধ্যে জার্নাল প্রকাশ করেছে ভারত। বিষয়টির সমালোচনা করে বাংলাদেশকে ভারতের এমন দাবির আপত্তি জানাতে হবে বলে মত দেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বেঙ্গল মসলিনকে জিআই পণ্যের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জার্নাল প্রকাশ করেছে ভারত। বাংলাদেশের মসলিনের সঙ্গে ভারতের ‘বেঙ্গল মসলিনের’ পার্থক্য কোথায়? তাই দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশের আপত্তি জানানো উচিত।

টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই দাবির ক্ষেত্রেও ভারত অসত্য তথ্য ব্যবহার করেছে বলে উল্লেখ করেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, ভারত টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই নিয়ে যে তথ্য দিয়েছে তাতে বলেছে, বসাক তাঁতিরা পশ্চিমবঙ্গে এ শাড়ি তৈরি শুরু করে। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে তো সব বসাকরা চলে যায়নি। এর পাশাপাশি এখানকার মুসলিমরাও এ শাড়ি তৈরি করে। ভারত টাঙ্গাইল শাড়ির যে বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছে, সেটিকে তারা আমাদের টাঙ্গাইল শাড়ি থেকে আলাদা বলছে। তাহলে তাদেরকে সেভাবেই নামকরণ করতে হবে। এছাড়া তাদের ওখানে টাঙ্গাইল নামেও কোনো স্থান নেই। এসব বিবেচনায় ভারতের দাবি যৌক্তিক নয়।

তিনি বলেন, প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৫০ হাজার টাঙ্গাইল শাড়ি ভারতে রফতানি হয় বলে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। নিজেদের এত বড় বাজার হারালে গরিব তাঁতিদের জন্য তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশ উচ্চতর মধ্যম আয়ের দেশে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। সেজন্য মেধাসম্পদের দিকে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। টাঙ্গাইল শাড়ির মতো বিষয়গুলোর সুরাহা করতে হবে। টাঙ্গাইল শাড়ি নিয়ে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সময় শেষ হয়ে গেছে। এখন আমাদের ভারতের আদালতে আইনি লড়াই চালাতে হবে। এছাড়া মসলিন ভারতের জিআই পণ্য হিসেবে এখনো নিবন্ধিত হয়নি। এ নিয়েও আপত্তি জানাতে হবে।

তিনি বলেন, এখন আমাদের অতি দ্রুততার সঙ্গে পেটেন্ট রেজিস্টার করতে হবে। তবে অবশ্যই সততা ও যত্নের সঙ্গে সেটি করতে হবে। জনমানুষের ক্ষোভ নিবারণের জন্য তাড়াহুড়ো করে করলে ঝামেলায় পড়ে যাব। এছাড়া ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারের উচিত আইনজ্ঞ নিয়োগ করে ভারতের আইনে তাদের আদালতে মামলা করা। ভারতের জিআই জার্নাল মনিটরিং করতে হবে নিয়মিত। একই সঙ্গে জেনেভার বাংলাদেশ মিশনের উচিত বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করা।

আলোচনা অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন ও সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।

সূত্র: ডেইলি-বাংলাদেশ
আইএ/ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

Scroll to Top