উত্তর চীনে টানা ভারী বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যার কারণে কমপক্ষে ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি রাজধানী বেইজিংয়ের মিয়ুন শহরে অবস্থিত একটি কেয়ার হোমের প্রবীণ বাসিন্দা। এ ঘটনা চীনের সাম্প্রতিক ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর একটি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) শহরের ডেপুটি মেয়র জিয়া লিনমাও এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করে।
জিয়া লিনমাও জানান, শুধুমাত্র রাজধানীতেই ৪৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে, এবং এখনও অন্তত ৩১ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
ডেপুটি মেয়র জিয়া লিনমাও আরও জানান, বৃষ্টিপাত ও বন্যায় বেইজিংয়ে ৩০০,০০০-এরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, ২৪,০০০-এর বেশি বাড়ি, ২৪২টি সেতু এবং ৭৫৬ কিলোমিটার (৪৭০ মাইল) রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মিয়ুনের প্রশাসন জানায়, তাইশিতুন এলাকায় একটি কেয়ার হোমে ৩১ জন প্রবীণ মারা গেছেন। ওই সময় সেখানে মোট ৬৯ জন বাসিন্দা ছিলেন, যাদের মধ্যে ৫৫ জনই শারীরিকভাবে অক্ষম ছিলেন।
বেইজিংয়ের নিকটবর্তী হেবেই প্রদেশেও বিপর্যয় নেমে এসেছে, যেখানে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেইজিংয়ের পার্শ্ববর্তী চেংদে শহরে আরও ৮ জনের প্রাণহানি ঘটে এবং ১৮ জন এখনো নিখোঁজ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে চরম আবহাওয়ার ঘটনা, যেমন মুষলধারে বৃষ্টিপাত এবং তীব্র তাপপ্রবাহ, আরও ঘন ঘন এবং প্রবল হয়ে উঠছে।
গত সপ্তাহের শুরুতে শুরু হওয়া প্রবল বর্ষণের ফলে বেইজিং ও পার্শ্ববর্তী হেবেই প্রদেশে নদীর পানি বেড়ে বহু এলাকা প্লাবিত হয়। রাজধানীর উত্তর-পূর্বে অবস্থিত পাহাড়ি মিয়ুন শহরে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ৫৭৩.৫ মিমি (২২.৬ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়েছে। যা বেইজিংয়ের বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের (প্রায় ৬০০ মিমি) কাছাকাছি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে বেইজিংয়ে ভারী বর্ষণে ৩৩ জন মারা যান। এর আগে ২০১২ সালে শহরটির স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় ৭৯ জনের মৃত্যু হয়।