গাজায় ২০ হাজার শিশুকে হত্যা যদি ভালো হয়, তাহলে ‘শয়তান’ কে? | চ্যানেল আই অনলাইন

গাজায় ২০ হাজার শিশুকে হত্যা যদি ভালো হয়, তাহলে ‘শয়তান’ কে? | চ্যানেল আই অনলাইন

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

ইসরায়েলি দৈনিক হারেত্‌জে প্রাবন্ধিক গিদিয়োন লেভি গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক মতামত নিবন্ধে প্রশ্ন তুলেছেন, গাজায় শিশুদের ব্যাপক হত্যাকাণ্ডকে যদি ‘ভালো’ বলা হয়, তবে ‘খারাপ’ কাকে বলা হবে।

নিবন্ধটির শিরোনামেই তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর যুদ্ধনীতির নৈতিকতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন।

আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের হিসাবে ২৩ মাসের যুদ্ধে গাজায় নিহত শিশুর সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। সংগঠনটি জানায়, গড়ে প্রতি ঘণ্টায় কমপক্ষে একজন শিশু নিহত হয়েছে।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন জানায়, গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। কমিশন অবিলম্বে এই কর্মকাণ্ড বন্ধ ও আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশনা পূর্ণভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানায়। ইসরায়েল পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে এ ধরনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে।

এর মধ্যেই ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল ‘কাজ শেষ না হওয়া’ পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যাবে। তার বক্তৃতার সময় বহু দেশের প্রতিনিধি হল থেকে বেরিয়ে প্রতিবাদ জানান।

চলমান যুদ্ধে মোট প্রাণহানির সংখ্যাও বাড়ছে। সাম্প্রতিক হিসাবে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬৬ হাজারের মতো ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, যা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে উদ্ধৃত হয়েছে।

গিদিয়োন লেভির লেখা অনুযায়ী, শিশুদের এই ব্যাপক মৃত্যু, অবরোধ ও অবকাঠামো ধ্বংসের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের নৈতিক বৈধতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি মনে করেন, এত বিপুল সংখ্যক শিশুমৃত্যুকে ন্যায্যতা দেওয়া গেলে নৈতিকতার মৌল ভিত্তিই ভেঙে পড়ে।

জাতিসংঘের সাম্প্রতিক মূল্যায়ন, মানবিক সংস্থার প্রতিবেদন ও জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর বক্তব্য—সব মিলিয়ে গাজায় মানবিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। যুদ্ধবিরতি, বাধাহীন ত্রাণপ্রবাহ ও শিশু সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান আন্তর্জাতিক মহল থেকে জোরালোভাবে উঠছে।

Scroll to Top