পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে প্রায় ছয় বছর আটকে থাকায় পঁচে যাওয়া ১৯০ মেট্রিক টন গম ধ্বংস করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ১৯০ মেট্রিক টন গম ও ৫ মেট্রিক টন ডলোমাইট পাউডার ধ্বংস করা হয়।
ধ্বংস করার সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন জেলার এডিশনাল এসপি মোঃ আমিরুল্লা, জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ ইউসুফ আলী ও ১৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোঃ জামাল হোসেনসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারী ভারত থেকে ১৯০ মেট্রিক টন গম আমদানি করেন মেসার্স ইমতিয়াজ ট্রেডার্স নামের আমদানি-কারক প্রতিষ্ঠান। ভারত থেকে গম আমদানি করে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আনা হলে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র হতে ছাড়পত্র না দেওয়ায় ও ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর ডলোমাইট পাউডার মিস ডিক্লারেশন হওয়ায় প্রায় ৬ বছরের মাথায় গমগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।
আরও জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারি নীলফামারী জেলার মেসার্স ইমতিয়াজ ট্রেডার্স ভারত থেক ১৯০.১০ মেট্রিক টন গম আমদানির পর উদ্ভিদ সংগ নিরোধ কেন্দ্র গমগুলোতে নানা রকম ক্ষতি কারক জীবানু রয়েছে বলে আশংকা করে। পরে তা গমের সেম্পল পরীক্ষার জন্য ঢাকার (খামারবাড়ি) কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের পরীক্ষাগারে প্রেরণ করা হয়। কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং গমগুলোকে পঁচা এবং ৫ টি ক্ষতিকারক জীবাণু আক্রান্ত বলে জানানোর পর বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র গমগুলো ফেরত দেয়ার জন্য আমদানিকারক ও সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফ এজেন্টকে চিঠি দেয়। এরপর কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ গমগুলোকে আটক করে।
স্থলবন্দর ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত ২০১৮ সালে ১৪ জানুয়ারী ভারত থেকে মেসার্স ইমতিয়াজ ট্রেডার্স ভারত থেকে ১৯০.১০ মেট্রিক টম (অবীজ) আমদানি করে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের দুটি ওয়্যারহাউজে আনলোড করে রাখেন। পণ্যটি প্রায় ৬ বছর যাবৎ ওয়্যার হাউজে পড়ে থাকায় পোকার আক্রমণে গম বিনষ্ট হয়ে যায়। বিষয়টি তাদেরকে বারবার চিঠি দিলেও কোনো কাজ হয়নি। এই গমের স্তূপ কেন্দ্রিক পোকা-মাকড়, ইঁদুর ও বিষধর সাপের উৎপাত অসহনীয় পর্যায়ে পড়ে যায়। বিনষ্ট গমের দূর্গন্ধে ওয়্যার হাউজের কর্ম পরিবেশ দূষিত হয়ে বন্দরে, কর্মী ও শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা দেখা দেয়।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় ৬ বছর যাবত পড়ে থেকে দু’টি ওয়্যারহাউজের একটি উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে রাখায় একদিকে চলমান পণ্যের জন্য স্থান সংকুলান করা যাচ্ছে না। অপরদিকে বন্দর তথা সরকার নিয়মিত বন্দর মাশুল ও ভ্যাট হতে বঞ্চিত হওয়ায় বন্দর কমিটির নির্দেশে আজ গমগুলো ধ্বংস করা হয়। এর মধ্য দিয়ে স্থলবন্দরের দুটি ওয়্যারহাউজ খালি হলো। এখন অন্যান্য আমদানি পণ্য রাখা যাবে।’