কারাগারে বসেই প্রধানমন্ত্রী হতে চান ইমরান খান – DesheBideshe

কারাগারে বসেই প্রধানমন্ত্রী হতে চান ইমরান খান – DesheBideshe

ইসলামবাদ, ০৬ ফেব্রুয়ারি – নির্বাচন সামনে রেখে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সাকেব ক্রিকেট তারকা ইমরান খানের দল পিটিআই’র ওপর নজিরবিহীন দমনপীড়ন চালানো হয়েছে। ইমরান খান ছাড়াও দলের বেশিরভাগ নেতাকর্মীকেই জেলে ভরা হয়েছে। পিটিআই এতদিন যে নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে আসছে, সেই ‘ব্যাট’ও কেড়ে নেয়া হয়েছে। কিন্তু এতসব বাধা, বিপত্তি ও হয়রানি সত্ত্বেও এই মুহূর্তে পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল পিটিআই নির্বাচনের মাঠ ছাড়েনি। শুধু তাই নয়, দলটি এখনও বিশ্বাস করে, আগামী বৃহস্পতিবারের (৮ ফেব্রুয়ারি) ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি তথা জাতীয় পরিষদের নির্বাচন জেতার সক্ষমতা রয়েছে তাদের।

নির্বাচন উপলক্ষে কয়েক সপ্তাহ আগেই জোর প্রচারণা শুরু করেছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএর-এ) ও পাকিস্তান পিপল’স পার্টির মতো রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু ভালোমতো প্রচারণা চালানোর সুযোগ পাচ্ছেন না পিটিআই নেতারা।

জানা গেছে, নির্বাচনে ইমরানের দলের প্রার্থীরা ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিলেও নানাভাবে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। সরাসরি মাঠে-ময়দানে সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, প্রার্থীদের গুম ও হত্যাও করা হচ্ছে। সবশেষ গত ৩১ জানুয়ারি খাইবার পাখতুনখোয়ার পিটিআই নেতা ও সংসদ সদস্য প্রার্থী রিহান জেব খানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনী প্রচারণায় বিকল্প ও অপ্রচলিত পদ্ধতি ব্যবহার করছেন পিটিআই নেতারা। কারাগারে থাকায় সরাসরি বক্তব্য দিতে পারছেন না ইমরান খান। এক্ষেত্রে একটি কৌশল বের করেছেন তিনি। কারাগার থেকে আইনজীবীদের মাধ্যমে নোট আকারে বক্তব্য লিখে পাঠোচ্ছেন ক্যাপ্টেন। আর সেই নোট থেকে এআই ভয়েস জেনারেশন ব্যবহার করে অডিও বক্তব্য তৈরি করা হচ্ছে। সেই অডিও বক্তব্য দিয়ে টিকটকে ডিজিটাল সভা-সমাবেশ আয়োজন করছে পিটিআই নেতারা।

সভা-সমাবেশ আয়োজনে ইমরান খানের কারা নম্বর ‘প্রিজোনার নাম্বার ৮০৪’ ব্যবহার করা হচ্ছে। খানের ফেসবুক পেজেও একটি চ্যাটবট রয়েছে। যার মাধ্যম নির্বাচন সম্পর্কিত সব তথ্য ও দিক-নির্দেশনা মুহূর্তে পৌঁছে যাচ্ছে নেতাকর্মী ও নির্বাচনের প্রার্থীদের কাছে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং নতুন প্রার্থীর মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের দমনপীড়ন ও হয়রানি কাটিয়ে উঠতে চায় পিটিআই। বিবিসির এক প্রতিবেদন মতে, নির্বাচনী আমেজের মধ্যেই গ্রাম থেকে শহর সবর্ত্রই একটা ভয়ের পরিবেশ বিরাজ করছে। এই আতঙ্কের মধ্যেই কেউ কেউ সাহস করে প্রচারণায় নামছেন।

নির্বাচনী প্রতীক কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্তটি ‘ছোট’ মনে হলেও পাকিস্তানের মতো একটি দেশের নির্বাচনের ক্ষেত্রে এর প্রভাবটা অনেক বড়। কারণ দেশটির জনসংখ্যার ৫৮ শতাংশই এখনও নিরক্ষর। ব্যালট পেপারে লেখা পড়ে ভোট দেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ছবিই একমাত্র ভরসা। ক্রিকেট ব্যাট অতি পরিচিত প্রতীক হওয়ায় এর ওপর হামলা চালানো হয়েছে।

ব্যাটের বদলে পিটিআই’র ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থীদের বিকল্প প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেই প্রতীক দিয়েই নির্বাচনের পোস্টার ছাপা হয়েছে। ব্যালট পেপারেও সেই ছবি থাকছে। কেউ পেয়েছেন দোলনা, কেউ পেয়েছেন কেটলি ও স্যাক্সোফোনের মতো অপরিচিত সব প্রতীক। এসব প্রতীক নিয়েও নির্বাচনে লড়ছে ইমরানের দল পিটিআই।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

Scroll to Top