কওমি মাদ্রাসার শিশুদের করুণ কাহিনী তুলে ধরলেন জয়া আহসান – DesheBideshe

কওমি মাদ্রাসার শিশুদের করুণ কাহিনী তুলে ধরলেন জয়া আহসান – DesheBideshe

ঢাকা, ১৯ মার্চ – কওমি মাদ্রাসাগুলোতে কোরআন হাদিস শিক্ষা দেওয়া হয়। শিক্ষা দেওয়া হয়, জীবনে চলার পথের নীতি-নৈতিকতা। ইসলামের মহিমা-গুণগান প্রচার ও প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত আলেম-ওলামারা। এদেশের আনাচে-কানাচে গড়ে উঠেছে মাদ্রাসা, মক্তব। যেখানে গরিব-এতিম বাচ্চারা দ্বীনী শিক্ষা গ্রহণ করে।

এসব শিশুদের করুণ কাহিনি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস লিখেছেন জনপ্রিয় বাংলাদেশি অভিনেত্রী জয়া আহসান।

পাঠকদের উদ্দেশ্যে হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘বর্তমান সমাজে এতিম অসহায় শিশুর সংখ্যা কম নয়। দরিদ্র অসহায় দুঃস্থ ও এতিমদের জন্য ইসলাম সমাজের ওপর অনেক দায়িত্ব দিয়েছে। রোজার শেষ দিকে বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোতে এক করুণ দৃশ্য দেখা যায়। সাধারণত ২৫ রোজা থেকে মাদ্রাসাগুলো ছুটি হতে থাকে। বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীর অভিভাবক এসে বাচ্চাদের বাসায় নিয়ে যায়। কিন্তু একদল বাচ্চাকে নিতে কেউ আসে না।’

জয়া লিখেছেন, ‘এদের কারও বাবা-মা নেই, কারও বাবা নেই মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেছে। অনেকের মা নেই, বাবা বাচ্চার খোঁজ রাখে না। খুব বেশি ভাগ্যবান হলে কারও কারও মামা খালা চাচা এসে কাউকে কাউকে নিয়ে যায়। বাকিরা সারা দিন কান্না করে। তারা জানে তাদের কেউ নিতে আসবে না। তারা সারা বছর কাঁদে না। কিন্তু যখন সহপাঠীদের সবাই বাসায় নিয়ে যায় অথচ তাদের কেউ নিতে আসে না তখন তাদের দুঃখ শুরু হয়ে যায়। মৃত মা বাবার ওপর তাদের অভিমান সৃষ্টি হয়- কেন তারা তাদের দুনিয়ায় রেখে এই বয়সে মারা গেল? তারা কি আর কিছুটা দিন বেঁচে থাকতে পারত না? মা-বাবা বেঁচে নাই তো কী হইছে? মামা চাচারা কেউ তাদের নিতে আসল না কেন? মা বেঁচে থাকতে মামারা কত আদর করত! বাবা বেঁচে থাকতে চাচারা কত আদর করত! এই বয়সেই তারা দুনিয়ার একটা নিষ্ঠুর চেহারা দেখেছে।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘একটা অনুরোধ- এই ঈদে আপনার কাছাকাছি এতিমখানায় যান। কয়জন বাচ্চা ঈদে বাড়ি যায়নি খোঁজ নিন। তাদের জন্য আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী যা পারেন তা নিয়ে যান। এই গরমে তাদের আইসক্রিম খাওয়াতে পারেন। নিদেন পক্ষে একটা চকলেট খাওয়ান। মনে রাখবেন, আজ আপনি বেঁচে না থাকলে আপনার ছোট সন্তান এতিম হয়ে যাবে! আমি ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করব যদি আল্লাহ্ সহায়ক হয়।’ ‘কালেক্টেড’।

অভিনেত্রী জয়া আহসানের ফেসবুক পোস্ট এরইমধ্যে ভাইরাল। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জীবন যাপনের করুণ কাহিনী তুলে ধরায় নেটিজেনদের অনেকেই তাকে স্বাগত জানিয়েছেন।

জাকির হোসেন নামে একজন লিখেছেন, পৃথিবীটা মানুষের হোক। ওদের নিয়ে ভাবার জন্য, কিছু লেখার জন্য আপনার প্রতি শ্রদ্ধা। আফতাব হোসেন নামে আরেকজন লিখেছেন, দারুন অনুভূতি আমাদের সকলের মাঝে মানবতা জাগ্রত হোক।

সবীব নামে আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য। ধর্মনিরপেক্ষভাবে কথা বলার জন্য এবং অসহায় মানুষের চিন্তা করার জন্য আরও ধন্যবাদ। আশা করি আপনি আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী এমন মানুষের পাশে থাকবেন এবং অন্যকে পাশে থাকার জন্য আগ্রহী করবেন।

আইএ/ ১৯ মার্চ ২০২৪

Scroll to Top