রুটি আমাদের সকলের সাধারণ নাস্তা হিসেবে পরিচিত হলেও তুরস্ক কিংবা আফগানিস্তানের মতো দেশে এর মহত্ব অনেক। সম্প্রতি ৮ হাজার বছরের পুরোনো রুটি আবিষ্কার করেছে তুরস্ক। এই প্রাচিনতম রুটিকে চলছে নানা গবেষণা।
সোমবার ১১ মার্চ হিন্দুস্তান টাইমস’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আবিষ্কারকৃত রুটিটি ৮ হাজার ৬০০ বছরের পুরোনো রুটির ছোট্ট একটি অংশ মাত্র।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রুটিটি সেই যুগে সেঁকানো হয়নি। তবে, ভেতরে স্টার্চ দিয়ে এটিকে এমনভাবে বানানো হয়েছিল, আজ এত হাজার বছর পরে এসেও একেবারেই অক্ষত রয়েছে রুটিটি। এর অনুরুপ কোনও উদাহরণও আর দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা।
তুরস্কের গাজিয়ানটেপ ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞানী সালিহ কাভাক জানান, এটি তুরস্ক এবং বিশ্বের জন্য একটি ‘এক্সাইটিং’ আবিষ্কার।
গবেষণায় যা পাওয়া যায়
তুরস্কের নেকমেটিন এরবাকান ইউনিভার্সিটি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের (বিআইটিএএম) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রুটিটি গোলাকার, অনেকটা স্পঞ্জের মতো অবকাঠামো রয়েছে এটির।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এটি ৮ হাজার ৬০০ বছরের পুরনো রুটি। এছাড়াও তুরস্কের আনাদোলু ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক প্রত্নতাত্ত্বিক আলী উমুত তুর্কান বুধবার তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ আউটলেট আনাদোলু এজেন্সিকে জানান, ‘আমরা বলতে পারি যে এটিই বিশ্বের প্রাচীনতম রুটি।’
প্রাচীনতম এই রুটির বিশদ বিবরণ
মেকান ৬৬ নামে একটি এলাকা থেকে তুরস্কের প্রত্নতাত্ত্বিকরা ৮ হাজার ৬০০ বছরের পুরনো বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন রুটিটি আবিষ্কার করেন। এই এলাকার আংশিকভাবে ধ্বংস হওয়া উনুনের কাঠামোর কাছে রুটির অবশিষ্টাংশ পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যায়। এই উনুনটি প্রাচীন মাটির ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, এটি খ্রিস্টপূর্ব ৬৬০০ সালের। দক্ষিণ তুরস্কের কোনিয়া প্রদেশের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান চাতালহাইউক-এ অবস্থিত মেকান ৬৬।
পরে বিশ্লেষণে নমুনার রাসায়নিক দিকটি সম্পর্কেও জানা যায়। এর মধ্যে উদ্ভিদ উপাদান এবং গাঁজন সূচক উভয়ই রয়েছে। এ থেকে প্রত্নতাত্ত্বিক জানতে পেরেছেন, সেই সময় রুটিটি বানানোর জন্য যে ময়দা এবং পানি দিয়ে আজকের একই নিয়মে ময়দাটি ভালো করে মেখে, উনুনেই এটি প্রস্তুত করা হয়েছিল এবং খুব সম্ভবত কিছু সময়ের জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছিল। তারপর কোনওভাবে এটি আর খাওয়া হয়নি।
খুব স্বাভাবিকভাবেই, এই আবিষ্কারটি প্রাচীন খাদ্য চর্চার উপর বিশেষভাবে আলোকপাত করতে সাহায্য করবে এবং প্রাথমিক সভ্যতার রন্ধনসম্পর্কীয় ঐতিহ্য সম্পর্কে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করবে বলেও জানায় গবেষকরা।