আবু রাফির সঙ্গে সাক্ষাৎ
অবশেষে তিনি আবু রাফির কক্ষে পৌঁছান। ঘরটি অন্ধকার ছিল, আর আবু রাফি তাঁর পরিবারের সঙ্গে শুয়ে ছিলেন। আবদুল্লাহ ঘরের কোন অংশে তিনি আছেন, তা বুঝতে না পেরে ডাক দেন, ‘আবু রাফি!’ আবু রাফি সাড়া দিলে, তিনি কণ্ঠস্বরের দিকে এগিয়ে গিয়ে তরবারি দিয়ে আঘাত করেন। কিন্তু প্রথম আঘাতে তিনি সফল হননি। আবু রাফি চিৎকার করে উঠলে আবদুল্লাহ কিছুক্ষণের জন্য বাইরে চলে যান।
কিছুক্ষণ পর তিনি কণ্ঠস্বর পরিবর্তন করে আবু রাফির আপনজনের মতো প্রশ্ন করেন, ‘আবু রাফি, এই আওয়াজ কিসের?’ আবু রাফি বলেন, ‘কেউ আমাকে তরবারি দিয়ে আঘাত করেছে।’ তখন আবদুল্লাহ আবারও তাকে প্রচণ্ড আঘাত করেন, কিন্তু তিনি তখনো বেঁচে ছিলেন। অবশেষে তিনি তরবারির ধারালো অংশ আবু রাফির পেটে চেপে ধরে পিঠ পর্যন্ত বিদ্ধ করেন। এবার তিনি নিশ্চিত হন যে আবু রাফি নিহত হয়েছেন।
পালানো ও আঘাত
আবদুল্লাহ একে একে দরজা খুলে নিচে নামতে থাকেন। পূর্ণিমার রাতে চাঁদের আলোতে তিনি ভুলবশত মনে করেন যে তিনি সিঁড়ির শেষ ধাপে পৌঁছে গেছেন। কিন্তু একটি ধাপ বাকি থাকায় তিনি পড়ে যান এবং পায়ের হাড় ভেঙে যায়। তিনি তৎক্ষণাৎ পাগড়ি খুলে পা বেঁধে নেন এবং দরজার কাছে বসে অপেক্ষা করেন। তিনি ঠিক করেন, আবু রাফির মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি সেখান থেকে যাবেন না।
ভোরে মোরগের ডাকের সঙ্গে একজন ঘোষক দুর্গের প্রাচীরে উঠে আবু রাফির মৃত্যুর ঘোষণা দেয়। তখন আবদুল্লাহ তাঁর সঙ্গীদের কাছে ফিরে বলেন, ‘তাড়াতাড়ি চলো, আবু রাফি আর বেঁচে নেই।’
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে ফিরে যাওয়া
আবদুল্লাহ ইবনে আতিক (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে ফিরে গিয়ে সমস্ত ঘটনা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে বলেন, ‘তোমার পা লম্বা করে দাও।’ তিনি পা লম্বা করলে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর পায়ে হাত বুলিয়ে দেন। অলৌকিকভাবে তাঁর পা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায়, যেন কোনো আঘাতই পাননি।
সূত্র: সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪,০৩৯