সিলেট থেকে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এবারের নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থীদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন: এই নৌকা নূহ নবীর নৌকা, এই নৌকায় মানব জাতিকে রক্ষা করেছিলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন, এই নৌকায় ভোট দিয়ে মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। আবার এই নৌকায় যখন ভোট পেয়ে আমরা সরকারে এসেছি তখন বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে। আজ তাই আপনাদের কাছে আমার আহ্বান- আগামী নির্বাচন আমরা যাদের নৌকা মার্কায় প্রার্থী দিয়েছি তাদেরকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিবেন। আপনাদের কাছে সেটাই আমার আহ্বান।
বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বিকালে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী বলেন: বাংলাদেশের মানুষই আমার পরিবার। সব বাধা অতিক্রম করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছি। জাতির পিতার হত্যার পর অবেধভাবে যারা ক্ষমতা দখল করেছিল, তারা কখনো দেশের মানুষের কথা ভাবেনি। তারা শুধু ভোট চুরি, ক্ষমতা ভোগ নিয়েই ব্যস্ত থেকেছে। আমরা যখন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছি বিএনপি তখন অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন: ২০০১ সালের নির্বাচনে আমাদেরকে ক্ষমতায় আসতে দিল না। কেন দিল না। বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক গ্যাস। ওই আমেরিকা প্রস্তাব করল গ্যাস বিক্রি করতে হবে। কারণ আমেরিকার কোম্পানি এখানে গ্যাস উত্তোলন করে। আমি বলেছিলাম আমি গ্যাস বেচবো না। এই গ্যাস আমাদের জনগণের, এই গ্যাস জনগণের কল্যাণে ব্যবহার হবে। জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করে যদি ৫০ বছরের রিজার্ভ রেখে অতিরিক্ত থাকে তাহলে বেচবো। তারা খুব নাখোশ হলেন। সিদ্ধান্ত নিলেন আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেবে না। তা ছাড়া আমাদের দেশেরও কিছু লোক ছিল।
তিনি বলেন: ২০০১ সালে ক্ষমতায় এলো বিএনপি-জামায়াত জোট। যে বিএনপি ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জনগণের ভোট চুরি করেছিল। ভোট চুরির অপরাধে এ দেশের মানুষ আন্দোলন করে ওই খালেদা জিয়াকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল। সেই ক্ষমতাচ্যুত, ভোট চোর, জনগণের সম্পদ চোর বিএনপিকে ক্ষমতায় বসালো ভোট কারচুপির মাধ্যমে। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়েছিল খালেদা জিয়া। সে ক্ষমতায় গেলে গ্যাস বেচবে। সেজন্য তার পিঠে বাহবা দিয়ে ক্ষমতায় বসালো। তার রেজাল্ট কী? দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, দুঃশাসন।
এসময় তিনি তার বক্তব্যে বিগত ১৫ বছরে সিলেটজুড়ে চলা আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন: স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলায় আমাদের কাজ চলছে। দেশব্যাপী সুষম উন্নয়ন যেন হয়, সেই লক্ষ্যে কাজ করছি আমরা।অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সকলের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আগুন জ্বালিয়ে নির্বাচন বন্ধ করতে চায়, এই সাহস তারা পায় কোথায়?
এর আগে বেলা ১টার দিকে সিলেট হযরত শাহজালাল, শাহপরান (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এসময় তার সঙ্গে ছোটবোন শেখ রেহানা ছাড়াও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং মন্ত্রিসভার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মাজার জিয়ারত করে জাতির মঙ্গল কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
বুধবার দুপুরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-৬০১ এর একটি ফ্লাইটে বেলা ১১টা ৩৩ মিনিটে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন শেখ হাসিনা।
ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে অভ্যর্থনা জানান কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
প্রতিবারের মতো এবারও সিলেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।