নয়াদিল্লি, ০৫ এপিল – ভারতের উত্তরপ্রদেশে মাদ্রাসা বন্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেছেন ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে এই প্রদেশের ১৭ লাখ মাদ্রাসা শিক্ষার্থী হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। এ ছাড়া প্রদেশের ১৬ হাজার মাদ্রাসা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে। খবর এনডিটিভির।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) এই রায় দিয়েছেন ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ বলেছেন, এলাহাবাদ হাইকোর্টের দেওয়া রায় প্রাথমিকভাবে সঠিক নয়। উত্তরপ্রদেশ ও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এবং মাদ্রাসা বোর্ডকে এই বিষয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের মাদ্রাসাগুলো ২০০৪ সালের মাদ্রাসা শিক্ষা অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে আসছিল। তবে গত মাসে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি লঙ্ঘন করছে এই কথা বলে এই আইনটিকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের স্কুলে স্থানান্তরিত করতে সরকারকে নির্দেশ দেন আদালত।
তবে শুক্রবার হাইকোর্টের এই রায় স্থগিত করে সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, মাদ্রাসা বোর্ডের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ন্ত্রক। বোর্ডের প্রতিষ্ঠা ভারতীয় ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিকে প্রভাবিত করে না।
রায়ে চন্দ্রচূড় বলেছেন, হাইকোর্ট মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন। এতে ১৭ লাখ শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আমরা মনে করি যে শিক্ষার্থীদের স্কুলে স্থানান্তরের নির্দেশনা ঠিক নয়।
তিনি বলেন, পিআইএল-এর উদ্দেশ্য যদি হয় গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও ভাষার মতো মূল বিষয়ে মাদ্রাসাগুলো ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা দেবে, তাহলে এর সমাধান মাদ্রাসা আইন, ২০০৪-এর বিধান বাতিল করে হবে না।
এই মামলায় উত্তরপ্রদেশের মাদ্রাসার পক্ষে প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। তিনি বলেন, ধর্মীয় শিক্ষার অর্থ ধর্মীয় নির্দেশনা নয়। হাইকোর্টের রায়ে ১০ হাজার মাদ্রাসা-শিক্ষক ও ১৭ লাখ শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। যদিও রাজ্য সরকার বলেছে তারা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য অন্য ব্যবস্থা করেছে।
তিনি বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষার গুণগত মান নেই, এটি সর্বজনীন ও বিস্তৃত নয়, এমন বলা ভুল হবে। মাদ্রাসার প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ বৈষম্যমূলক হবে এমন ইঙ্গিত দিয়ে তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালে ‘অরুণা রায় বনাম ভারত’ মামলায় রায়ে এমনটাই বলেছিলেন সুপ্রিম কোর্ট।
সূত্র: কালবেলা
আইএ/ ০৫ এপিল ২০২৪