এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
২০২১ সালে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। তদন্তের দায়িত্ব পান আইসিসি’র তৎকালীন প্রধান প্রসিকিউটর ফাতু বেনসুদা। ওই সময় বেনসুদাকে তদন্ত বন্ধে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের তৎকালীন প্রধান ইয়োসি কোহেন হুমকি দিয়েছিলেন বলে উঠে এসেছে এক প্রতিবেদনে।
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, মোসাদের সাবেক প্রধান আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান প্রসিকিউটরকে একাধিক গোপন বৈঠকে এই হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি যুদ্ধাপরাধের তদন্ত বন্ধের জন্য বেনসুদাকে চাপ দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু বেনসুদা তারপরও তার কাজ চালিয়ে যান।
এই ঘটনার বিষয়ে ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কোহেনের এই কাজ উচ্চ পর্যায় থেকে অনুমতিপ্রাপ্ত। আরেক কর্মকর্তা জানান, মোসাদের উদ্দেশ্য ছিল প্রসিকিউটরকে আপস করানো বা তাকে এমন একজন হিসেবে তালিকাভুক্ত করা যে ইসরায়েলের দাবিতে সহযোগিতা করবে। তৃতীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, কোহেন নেতানিয়াহুর ‘বার্তাবাহক’ হিসেবে কাজ করছিলেন।
জানা গেছে, বেনসুদাকে বলা হয়েছিল, আপনার উচিত আমাদেরকে সাহায্য করা এবং আমাদের আপনার যত্ন নিতে দেয়া। আপনি নিশ্চই এমন কোনো পরিস্থিতিতে পড়তে চান না, যাতে আপনার বা আপনার পরিবারের নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করতে হয়। এরপর ইয়োসি কোহেনের উদ্দেশ্য নিয়ে আইসিসির সিনিয়র কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছিলেন ফাতু বেনসুদা। বলেছিলেন, ইয়োসি কোহেন তাকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছেন। তার আচরণে হুমকি ছিল বলেও জানান তিনি।
এই বিষয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এগুলো ইসরায়েল রাষ্ট্রকে আঘাত করার জন্য মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ। তাছাড়া বিষয়টি নিয়ে কোহেন এবং বেনসুদা কেউই মন্তব্য করতে রাজি হননি।
২০২১ সালে শুরু হওয়া এই তদন্ত গত সপ্তাহে শেষ হয়। আর এর ওপর ভিত্তি করেই বেনসুদার উত্তরসূরি বর্তমান প্রসিকিউটর করিম খান ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের জন্য প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চান। করিম খান একইসাথে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং তিন হামাস নেতার বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানান।