এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রাক্তন স্ত্রী জেমিমা গোল্ডস্মিথ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের মালিক ইলন মাস্কের কাছে প্রকাশ্যে আবেদন জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তানে ইমরান খানের কারাবাস ও আইনি পরিস্থিতি নিয়ে তার পোস্টগুলো প্ল্যাটফর্মে দমন করা হচ্ছে এবং সেগুলো সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জেমিমা গোল্ডস্মিথ বলেন, পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ ইমরান খানের সঙ্গে যে আচরণ করছে এবং তার দীর্ঘ আইনি লড়াই নিয়ে তিনি যে আপডেট দেন, তা কার্যত অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। তিনি মাস্ককে তার অ্যাকাউন্টে প্রয়োগ করা তথাকথিত ‘ভিজিবিলিটি ফিল্টারিং’ বা দৃশ্যমানতা সীমিত করার বিষয়টি সংশোধনের আহ্বান জানান।
জেমিমা লেখেন, তার দুই ছেলেকে তাদের বাবার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না এবং ইমরান খানকে প্রায় ২২ মাস ধরে ‘বেআইনিভাবে’ নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, এক্সই একমাত্র প্ল্যাটফর্ম যেখানে তিনি বিশ্ববাসীকে জানাতে পারেন যে পিটিআই নেতা বর্তমানে মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত একজন রাজনৈতিক বন্দী।
তবে জেমিমার অভিযোগ, পাকিস্তানের ভেতরে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার পোস্টগুলোর পৌঁছানোর পরিসর প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে।
ইলন মাস্ককে উদ্দেশ করে তিনি লেখেন, আপনি বাকস্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘বাকস্বাধীনতা নয়, কিন্তু কেউ তা শোনে না’।
এর আগেও জেমিমা গোল্ডস্মিথ অভিযোগ করেছিলেন, পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ তার ছেলেদের ইমরান খানের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বাধা দিচ্ছে এবং তারা পাকিস্তানে গেলে গ্রেপ্তারের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ইমরান খানের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তার বোন আলেমা খান। বুধবার আদিয়ালা কারাগারের বাইরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, গত আট মাস ধরে আমরা প্রতি মঙ্গলবার এখানে আসছি, কিন্তু আমাদের ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে এবং অবৈধভাবে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইমরান খানের বিরুদ্ধে এই নির্যাতন বন্ধ করা উচিত।
পরিবারের সদস্যদের এসব বক্তব্যে কারাগারে ইমরান খানের অবস্থান, তার সঙ্গে যোগাযোগে নিষেধাজ্ঞা এবং তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে স্মরণ করা হচ্ছে, গত বছরের জুলাই মাসে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল পাকিস্তানের তীব্র সমালোচনা করে বলেছিল যে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ইমরান খানকে নির্বিচারে আটক রাখা হয়েছে। জাতিসংঘের মতে, তার কারাবাসের উদ্দেশ্য ছিল তাকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখা।





