দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার বাবার মার্কা নৌকা, তার বাবা ৭০ সালে এই নৌকা মার্কা নিয়ে করেছেন। শেখ হাসিনাও এ মার্কা নিয়ে নির্বাচন করছেন। এত প্রিয় মার্কাটা এ আসন থেকে ছাড়তে হয়েছে। এটা নিশ্চয়ই তার কোনো প্রয়োজন আছে বলেই ছেড়েছেন। এ বিষয়টা যদি আওয়ামী লীগের লোকেরা না বুঝে তাহলে তারা মুর্খ।’
মুজিবুল হক চুন্নু শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে তার নিজ গ্রাম কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার কাজলা গ্রামে ‘সর্বস্তরের জনসাধারণকে’ নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার প্রয়োজন আছে বলেই নৌকা এখানে (করিমগঞ্জ-তাড়াইলে) তাকে ছাড়তে হয়েছে। নিশ্চয়ই একটা কিছু গুরুত্ব আছে, নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে। তবে আওয়ামী লীগের লোকেরা বিষয়টি বুঝতে পারছে না উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, ‘বুঝবে, বুঝবে নিশ্চয় খুব তাড়াতাড়ি বুঝবে। যাদের ব্যক্তি স্বার্থ আছে তারা কখনোই বুঝবে না।’
মুজিবুল হক আরও বলেন, ‘মন্ত্রীর প্রতি আমার এত খায়েশ নাই। আমি এমপি হইলে মানুষের জন্য কথা বলতে পারি এটা আমার সবচেয়ে ভাল্লাগে। পার্লামেন্টে কথা বলা, এগুলো আমি পারি। পারার মতো জ্ঞান বুদ্ধি আল্লাহ আমারে যথেষ্ট দিছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজনীতি করলে মানুষের জন্য কথা বলা যায়, চুরিও করা যায়, খারাপও করা যায়, ভালোও করা যায়। যে যেটা করে। কিন্তু রাজনীতি করলে মানুষের ভালো করতে গেলে অনেক ভালো করা যায়। মানুষের জন্য ফাইট করা যায়, মানুষের দাবি নিয়ে সারাদেশে বিদেশে সে দাবিকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সর্বোচ্চ যারা আছেন তাদের কানে পৌঁছানো যায়। আমি এর জন্য রাজনীতি করি।’
কিশোরগঞ্জ-৩ আসনটিতে লাঙ্গল প্রতীককে ছাড় দিয়ে নৌকার প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদের মনোনয়ন তুলে নেয় আওয়ামী লীগ। আসনটিতে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
আসন সমঝোতায় নৌকার প্রার্থী মো: নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদকে সরে দাঁড়াতে হলেও মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগের চার স্বতন্ত্র প্রার্থী। তারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রচারে সক্রিয় রয়েছেন। নৌকার ছাড়ের পরও ভোটের মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন স্বতন্ত্ররা। আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংককে নিজেদের পক্ষে টানার চেষ্টা করছেন তারা। এছাড়া চার স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে সমঝোতার চেষ্টাও শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এ পরিস্থিতিতে এবার জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু’র নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া সহজ হবে না বলে মনে করছেন এলাকার সাধারণ ভোটারেরা।
সাধারণ ভোটারেরা মনে করছেন, কৌশল করে নৌকাকে নির্বাচনের মাঠ থেকে দূরে রাখলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চুন্নু’র জয়ের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারেন। এবার কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়তে হতে পারে জাতীয় পার্টির মহাসচিব চুন্নুকে।