যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, আমাদের সবারই বিকল্প আছে কিন্তু বাংলাদেশে শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত এক শোভাযাত্রায় তিনি একথা বলেন।
শেখ পরশ বলেন, ৪৪ বছর আগে শেখ হাসিনা এই বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন বলে আমরা পেয়েছি উন্নয়ন, আমরা পেয়েছি ভোটারাধিকার, মানুষের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। সেই দিন কি পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করার পরেও তিনি এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের এবং এদেশের মানুষের মৌলিক অধিকারসমূহ উদ্ধার করার জন্য জীবনের সকল হুমকি ও মায়াকে তুচ্ছ করে আপনাদের কাছে উপস্থিত হয়েছেন।
তিনি বলেন, সেই বঙ্গবন্ধুই রক্তের উত্তরাধিকার হিসেবে গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে এবং এদেশের মানুষের উন্নয়নের বাহক হিসেবে তিনি সেদিন বাংলার মাটিতে উপস্থিত হয়েছিলেন। দৃপ্তকণ্ঠে সেদিন তিনি বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার তিনি করবেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুতি হয়ে না বরং একটা ন্যায় পরায়ণ সমাজ ব্যবস্থার সৃষ্টির মাধ্যমে। সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করেছিলেন। এটা লক্ষণীয়, কোন সামারি ট্রায়ালে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়নি। সামাজিক ন্যায় পরায়ণ বিচার ব্যবস্থা বুকে নিয়ে তিনি প্রচলিত আইনেই বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, যেখানে সামারিক জান্তারা রাতের পর রাত মুক্তিযোদ্ধা সেনাবাহিনীর অফিসারদের হত্যা করেছে, ফাঁসি দিয়েছে সেই প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার এই আগমন ছিল অত্যন্ত সাহসী এবং আত্মত্যাগী। সেই আগমনের বার্তা এদেশের লক্ষ লক্ষ নিপীড়িত, শোষিত মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল। এদেশের জনগণ আস্তা ফিরে পেয়েছিল, স্বপ্ন দেখেছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্বপ্নের বাংলাদেশ পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার। বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিল এদেশের মানুষের খেদমত করতে, এদেশের মানুষের জন্য একটা জাতি রাষ্ট্র সৃষ্টির মাধ্যমে উন্নয়নমূলক, প্রগতিশীল, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি।
যুবলীগের চেয়ারম্যান বলেন, শেখ হাসিনা ২১ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে থেকেও তার সেই দৃঢ় প্রত্যয় ধরে রেখে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। যারা যুদ্ধাপরাধীদের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিল, মন্ত্রী বানিয়েছিল তিনি সেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছেন। এখনও চলমান রয়েছে। যার ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার ও তাদের সন্তানরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। তা না হলে এই বাংলাদেশকে পশ্চাৎপদ বাংলাদেশ হিসেবে পরিচালিত হতো।
তিনি আরও বলেন, আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল বাংলাদেশ হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত। এই জন্য সেই অপশক্তিরা আবার সক্রিয় হয়েছে। যেই অপশক্তির চারিত্রিক বৈশিষ্ট আপনারা সবাই জানেন, তা হলো মিথ্যাচার আর অপপ্রচারের রাজনীতি। সাম্প্রতিককালে যুক্ত হয়েছে পর-নির্ভর রাজনীতি। আজকে তারা বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভর করে কিন্তু জনগণের ওপর নির্ভর করে না। তারা নির্ভর করে মিস্টার লু’দের ওপর যে তাদের হাত ধরে ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে। এই স্বপ্ন সেই স্বপ্ন আজকে ব্যর্থ হয়েছে, ধূলিসাৎ হয়েছে। কারণ শেখ হাসিনার সাথে রয়েছে এদেশের আপামর জনগণ।
তিনি বলেন, আজকের বর্ণাঢ্য র্যালী সেটাই প্রমাণ করে যে শেখ হাসিনা এই মুহূর্তে এই উপ-মহাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। তার নেতৃত্ব, তার দায়িত্বশীলতা, তার গুণ, তার ধৈর্য্য তাকে আজকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। যুবলীগের নেতা-কর্মীদের দায়িত্ব রয়েছে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা, দেশের উন্নয়নের যে ধারা, উন্নয়নের সুফল শুধু জনগণের দৌড় গোড়ায় পৌছে দিলেই হবে না, এই অপশক্তিরা আর কোন দিন যেন এদেশের জনগণের অধিকার ক্ষুণ্ণ করতে না পারে সে দিকে যুবলীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীরা দৃষ্টি রাখবেন। দরকার হলে বুকের রক্ত দিয়ে জনগণের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন। মনে রাখবেন আমাদের সবারই বিকল্প আছে কিন্তু বাংলাদেশে শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই।
আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া বাংলাদেশের মানুষের ওপর বঙ্গবন্ধুর খুনী জিয়াউর রহমান যে নির্মম অত্যাচার চালিয়েছিল তা আপনারা জানেন। বাংলাদেশের মানুষের কথা বলার অধিকার ছিল না, ভাতের অধিকার ছিল না, ভোটের অধিকার ছিল না। হ্যাঁ-না ভোট দিয়ে এই জিয়াউর রহমান মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। এমনকি যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মুক্তিযোদ্ধা, কার্ফু জারি করে রাতের পর রাত তাদেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে। বিনা বিচারে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের হত্যা করেছে জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন-বাংলাদেশের মানুষ আলোর পথ খুঁজে পায় নি, দিশাহারা ছিল বাংলাদেশের মানুষ।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম, মো. হাবিবুর রহমান পবন, মো. নবী নেওয়াজ, মো. এনামুল হক খান, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, ইঞ্জি. মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, জসিম মাতুব্বর, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, মো. রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।