আবারও পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে খোলা চিঠি ইমরান খানের – DesheBideshe

আবারও পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে খোলা চিঠি ইমরান খানের – DesheBideshe

ইসলামবাদ, ০৮ ফেব্রুয়ারি – পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনিরকে দ্বিতীয়বারের মতো খোলা চিঠি লিখেছেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তানের ‘সবচেয়ে বড়’ রাজনৈতিক দলকে পরিকল্পিতভাবে নিশানা করা হচ্ছে।

চিঠিতে ইমরান খান বলেন, আমি দেশ ও জাতির উন্নতির জন্য আন্তরিক উদ্দেশ্য নিয়ে সেনাপ্রধানকে একটি খোলা চিঠি লিখেছিলাম, যাতে সামরিক বাহিনী ও জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিভাজন কমানো যায়। কিন্তু এর প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন ও গুরুত্বহীন ছিল।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান উল্লেখ করেন, তিনি দেশটির ‘সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের’ নেতা এবং সারাজীবন পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের জন্য কাজ করেছেন।

তিনি আরও লেখেন, আমি ১৯৭০ সাল থেকে ৫৫ বছর ধরে জনসেবায় নিয়োজিত এবং গত ৩০ বছরের উপার্জন সম্পূর্ণ স্বচ্ছ। আমার জীবন ও মৃত্যু শুধু পাকিস্তানের সঙ্গেই যুক্ত।

এসময় ইমরান খান পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ও জনগণের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ার সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। প্রথম চিঠির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যদি জনগণের মতামত নেওয়া হতো, তাহলে ৯০ শতাংশ মানুষ তার উত্থাপিত ছয় দফা দাবিকে সমর্থন করতো।

পিটিআই প্রতিষ্ঠার অভিযোগ, গুপ্তচর সংস্থাগুলোর মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করে পুতুল সরকার বসানো, বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে ২৬তম সাংবিধানিক সংশোধনী পার্লামেন্টে জোরপূর্বক পাস করানো, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন করতে কঠোর আইন প্রয়োগ, রাজনৈতিক অস্থিরতার মাধ্যমে অর্থনীতিকে ধ্বংস করা, দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে দমন করা এবং প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অপব্যবহার করা— এসব কর্মকাণ্ড শুধু জনগণের মনোভাবই নষ্ট করছে না, বরং সেনাবাহিনীর সঙ্গে জনসাধারণের বিভেদ আরও বাড়িয়ে তুলছে।

আদিয়ালা কারাগারে বন্দি ইমরান খান বলেন, সেনাবাহিনী দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কিছু ‘কালো ভেড়া’ (ব্ল্যাক শিপ) এর ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।

এর আগে, তার প্রথম চিঠিতে ইমরান খান সেনাপ্রধানকে বিভিন্ন নীতি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান এবং একটি বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি তোলেন।

ইমরান খানের আইনজীবী ফয়সাল চৌধুরী জানান, ছয় দফার ওই চিঠিতে ‘ভুয়া নির্বাচন’, অর্থপাচারকারীদের প্রচার, ২৬তম সাংবিধানিক সংশোধনী এবং আল-কাদির ট্রাস্ট মামলার রায় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

তবে পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গওহর আলী খান দাবি করেন, এই চিঠির মাধ্যমে পিটিআইয়ের নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বরং ইমরান খান এটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লিখেছেন।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের রাজনৈতিক উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ বলেন, ইমরান খানের চিঠির উদ্দেশ্য সেনাবাহিনী ও জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা বা সেনা কমান্ডের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করা। তিনি ইমরান খানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, পার্লামেন্টের মধ্য দিয়েই রাজনৈতিক সংগ্রাম চালাতে হবে।

সূত্র: জাগো নিউজ
আইএ/ ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

 



Scroll to Top