আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলো, যাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র রাষ্ট্রও রয়েছে। সেসব দেশ কাবুলের কাছে বাগরাম সামরিক ঘাঁটি পুনরায় দখলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে।
সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল ব্যাংককিং অ্যান্ড ফাইনান্স রিভিও এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
মঙ্গলবার ৭ অক্টোবর মস্কোতে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে এই অবস্থান জানানো হয়।
রাশিয়ার আয়োজিত মস্কো ফরম্যাট বৈঠকে অংশ নেয় ১০টি দেশ। যার মধ্যে ছিল ভারত, রাশিয়া, চীন, ইরান ও কয়েকটি মধ্য এশীয় রাষ্ট্র। এই বৈঠকে প্রথমবারের মতো অংশ নেন তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুতাক্কি।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, অংশগ্রহণকারী দেশগুলো কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের আফগানিস্তান বা তার প্রতিবেশী অঞ্চলে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের প্রচেষ্টা অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র বা বাগরামের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি, বিবৃতিটি স্পষ্টতই ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরোধিতা করে এবং তালেবান সরকারের অবস্থানকে সমর্থন করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আফগানিস্তান ও পার্শ্ববর্তী দেশে সামরিক অবকাঠামো স্থাপনের যেকোনো প্রচেষ্টা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে নয়।
মস্কোতে বৈঠক শেষে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুতাক্কি বলেন, আফগানিস্তান একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। ইতিহাসে কখনোই আমরা বিদেশি সামরিক উপস্থিতি মেনে নিইনি। আমাদের সিদ্ধান্ত ও নীতি একই থাকবে আফগানিস্তানকে স্বাধীন ও মুক্ত রাখা।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন অভিযানে তালেবান সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়, যা পরবর্তীতে দীর্ঘ দুই দশকের যুদ্ধের জন্ম দেয়। কাবুলের বাইরে অবস্থিত বাগরাম ঘাঁটিটি আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি ছিল। ২০২১ সালে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবান পুনরায় ক্ষমতা দখল করে।
গত মাসে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন যে, আফগানিস্তান বাগরাম ফিরিয়ে না দিলে খারাপ কিছু ঘটবে। তিনি বলেন, ঘাঁটিটির অবস্থান চীনের কাছে হওয়ায় এটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
তবে বর্তমান ও সাবেক মার্কিন কর্মকর্তারা ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে অবাস্তব বলে উল্লেখ করেছেন।
তাদের মতে, বাগরাম পুনর্দখল কার্যত একটি পুনরায় আগ্রাসনের মতো দেখাবে। যার জন্য অন্তত ১০ হাজার সৈন্য ও উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন হবে।