ঢাকা, ২২ ফেব্রুয়ারি – কার্যক্ষমতা বাড়াতে পোস্তগোলা সেতু সংস্কার কাজ শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। ফলে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহাকারী যানবাহনগুলোকে বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত বিকল্প পথ ব্যবহার করতে বলেছে সওজ। এ সময় ঢাকাসহ ২১টি জেলার যাতায়াতে বাড়তি যানজটের শঙ্কা করছে পুলিশ।
মেরামত চলাকালীন ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ- এই ১৬ দিন ভারী যানবাহন চলতে পারবে না এই সেতু দিয়ে। তবে বাস ও হালকা যানবাহনের জন্য বন্ধ থাকবে পাঁচদিন।
এর আগে রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপির সদরদপ্তরে ট্রাফিক বিভাগসহ সাতটি সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা বৈঠক করেন।
বৈঠকে বাড়তি যানজট মোকাবিলায় ও বিকল্প সড়ক নির্ধারণে চলাচল নিশ্চিতে আলোচনা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সংস্কার কাজ চলার সময় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে সম্ভাব্য রুটগুলোকে দুই ধরনের ক্যাটাগরিতে করা হয়েছে। একটি ক্যাটাগরি-ভারী যানবাহন, আরেকটি হালকা যানবাহন। এ ছাড়া বিকল্প যেসব রুট আছে সেগুলো নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পোস্তগোলা সেতুর (বুড়িগঙ্গা-১) সংস্কার কাজ শুরু হচ্ছে। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে এ কাজ চলবে ৮ মার্চ পর্যন্ত। সংস্কার কাজ চলার সময় ঢাকাসহ ২১টি জেলার যাতায়াতের ক্ষেত্রে বাড়তি যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বৈঠক শেষে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সেতুর সংস্কার কাজ চলার সময় ঢাকা মহানগরীর বাইরে থেকে ভারী যানবাহন কোন পথে আসবে, সম্ভব্য কোন রুট দিয়ে আসা-যাওয়া করতে পারে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি।
এ বিষয়ে একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ডিএমপি কীভাবে কাজ করতে পারে; ডিএমপিকে অন্যান্য অংশীদাররা কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে; সে সব বিষয়েই আজ আলোচনা হয়েছে।
ভারী যানবাহন ও বড় বাসের জন্য নির্দেশনা বিকল্প সড়ক
১. যাত্রাবাড়ী থেকে ছেড়ে আসা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কগামী যানবাহন ধোলাইপাড় বাসস্ট্যান্ড ও বাবুবাজার সেতু ব্যবহার করে তেঘড়িয়া ইন্টারসেকশন হয়ে মহাসড়কে প্রবেশ করবে।
২. জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক থেকে যাত্রাবাড়ীগামী যানবাহন তেঘড়িয়া ইন্টারসেকশন-বাবুবাজার সেতু ব্যবহার করে ধোলাইপাড় হয়ে যাত্রাবাড়ী প্রবেশ করবে।
৩. গাবতলী থেকে ছেড়ে আসা দক্ষিণাঞ্চলগামী যানবাহনগুলো পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাট হয়ে যাতায়াত করবে।
৪. দেশের পূর্বাঞ্চল/দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা দক্ষিণাঞ্চল/দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলগামী যানবাহনগুলো চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরিঘাট হয়ে যাতায়াত করবে।
৫. দেশের উত্তরাঞ্চল হতে ছেড়ে আসা দক্ষিণাঞ্চলগামী যানবাহনগুলো বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে যাতায়াত করবে।
হালকা যানবাহনের (মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, সিএনজি, অটোরিকশা) জন্য বিকল্প সড়ক
১. পদ্মা সেতু থেকে নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামমুখী যানবাহন শ্রীনগর-মুন্সিগঞ্জ-মুক্তারপুর সেতু- তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু-মদনপুর সড়ক ব্যবহার করতে পারবে।
২. সিলেট, চট্টগ্রাম থেকে পদ্মা সেতুমুখী যানবাহন মদনপুর থেকে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু-মুক্তারপুর সেতু মুন্সিগঞ্জ-শ্রীনগর সড়ক ব্যবহার করতে পারবে।
৩. পদ্মা সেতু থেকে ঢাকাগামী যানবাহন শ্রীনগর দোহার-নবাবগঞ্জ-কেরানীগঞ্জ (আর-৮২০) সড়ক, তুরাগ-রোহিতপুর (জেড-৫০৬৯), আব্দুল্লাহপুর-রাজাবাড়ী বাজার-কোনাখোলা মোড়-বছিলা সেতু-মোহাম্মদপুর সড়ক ব্যবহার করতে পারবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ এই পোস্তগোলা সেতুর সংস্কার কাজের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। তবে এসএসসি পরীক্ষার সূচির সাথে সমন্বয় করে সেই সময়সূচির পরিবর্তে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত চলবে সংস্কার কাজ।
২০২০ সালের ২৯ জুন বুড়িগঙ্গা নদীর সদরঘাট এলাকায় ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া লঞ্চ মর্নিং বার্ডকে উদ্ধার করতে আসে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়। এ সময় পোস্তগোলা সেতু পার হওয়ার সময় সেতুতে ধাক্কা দেয় ও আটকে যায় জাহাজটি। এতে সেতুর নিচের পাটাতন ও বিম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর থেকে কয়েক দফায় সংস্কার করে সেতুতে যানবাহন চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে।
সূত্র: আরটিভি নিউজ
আইএ/ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪