লাইফস্টাইল ডেস্ক
আনারস একটি পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল। পুষ্টিগুণে আনারস অতুলনীয়। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ এ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান। যেগুলো শরীরের কোষকে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করে।
এই ফলে রয়েছে এনজাইম ব্রোমেলেইন। আনারসে আরও আছে ভিটামিন ‘সি’ ও ম্যাঙ্গানিজ নামক খনিজ উপাদান। এতে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন বি- ১, যা শরীরের জন্য অপরিহার্য। পাশাপাশি এই ফল খেলে শরীরে খুব কম ক্যালরি সঞ্চিত হয়। সুতরাং মুটিয়ে যাওয়ার ভয়ও থাকে না।
পুষ্টিবিদরা বলেন, প্রতি ১০০ গ্রাম আনারস থেকে পাওয়া যায় মাত্র ৫০ কিলোক্যালরি। এই ফলে কোলেস্টেরলও নেই। এতে থাকা পেকটিন নামক গুরুত্বপূর্ণ ডায়েটরি ফাইবার। ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্সের নানা উপদান যেমন ফলেট, থায়ামিন, পাইরিওফিন ও রিবোফ্লোবিনও পাওয়া যায় আনারস থেকে।
প্রতি ১০০ গ্রামে আনারসে পাওয়া যায় ৫০ কিলোক্যালরি শক্তি। এতে ভিটামিন-এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। ১০০ গ্রাম আনারসে ০.৬ ভাগ প্রোটিন, ০.১২ গ্রাম সহজপাচ্য ফ্যাট, ০.৫ গ্রাম খনিজ পদার্থ, ১৩.১২ গ্রাম শর্করা, ০.১১ গ্রাম ভিটামিন বি-১, ০.০৪ মি. গ্রাম ভিটামিন-২, ভিটামিন- সি ৪৭.৮ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৮ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ০.০২ গ্রাম, আঁশ ১.৪ গ্রাম এবং ১.২ মিলি গ্রাম লৌহ রয়েছে।
আনারস জ্বর ও জন্ডিস রোগের জন্য বেশ উপকারী। এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালরি, যা আমাদের শক্তি জোগায়। গবেষণায় দেখা গেছে, আনারস গলা ব্যথা, সাইনোসাইটিসজাতীয় অসুখগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করে। হজমে সাহায্য করে। সঙ্গে শরীরের অন্য অঙ্গগুলোকেও ভালো রাখে।
দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহয়তা করে আনারস। আবার আনারস ক্ষুধাবর্ধক হিসেবে কাজ করে। যে কোনো অসুস্থতার পরে মুখে রুচির জন্য আনারস খাওয়া যেতে পারে।
আনারস খেলে ভালো থাকবে আপনার দাঁতের মাড়ি আর দাঁত দুটোই। আর ভুলে যাবেন না এতে আছে ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম দাঁতের জন্য উপকারী।
আনারস রক্ত পরিষ্কার করে হৃৎপিণ্ডকে কাজ করতে সাহায্য করে। হৃৎপিণ্ড আমাদের শরীরে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত সরবরাহ করে। এছাড়াও হৃৎপিণ্ডের নানা রকম অসুখে থেকে আনারস দেয় সুরক্ষা।
আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি। ত্বকের অসুখ, জিহ্বা, তালু, দাঁত, মাড়ির যে কোনো অসুখের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আনারস। দেহের তৈলাক্ত ত্বক, ব্রণসহ সব রূপলাবণ্যে আনারসের যথেষ্ট কদর রয়েছে। এছাড়াও আনারসের প্রোটিন ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, ত্বককে কুঁচকে যাওয়া থেকে বাঁচায়
দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় এই ফল। ফলে শিরা-ধমনির দেয়ালে রক্ত না জমার জন্য সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত প্রবাহিত হতে পারে। ফলে রক্ত শোধনে এই ফলের ভূমিকা রাখে।
আনারস কৃমিনাশক। কৃমি দূর করার জন্য সকালে খালি পেটে আনারস খাওয়া উচিত। তবে অবশ্যই অ্যাসিডিটি থাকলে খালি পেটে আনারস ক্ষতি করতে পারে।
প্রচুর পরিমাণ ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে আনারসে। যা হাড় ও কানেক্টিভ টিস্যুকে করে শক্তিশালী। এক কাপ আনারসের জুস আমাদের দৈনিক প্রয়োজনীয় ম্যাঙ্গানিজের ৭৩ ভাগ পূরণ করতে সক্ষম।
আনারস মানবদেহের গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থিগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রভাব রাখে। গয়টার অর্থাৎ থাইরয়েড গ্রন্থির স্ফীত হওয়া প্রতিরোধ করে। নিয়ন্ত্রণ করে উচ্চ রক্তচাপ। এটি আর্থরাইটিস উপশমে সহায়তা করে। আনারস কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে। ক্ষুদ্রান্ত্রের জীবাণু ধ্বংসে উপকারী। পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়। মর্নিং সিকনেস কাটাতেও আনারসের জুড়ি নেই। এটি জরায়ু, স্তন, ফুসফুস, অন্ত্র ও ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বার্ধক্যজনিত চোখের ত্রুটি প্রতিরোধে সাহায্য করে। আনারস জ্বর ও জন্ডিস রোগের জন্য বেশ উপকারী।
সারাবাংলা/এসবিডিই